জাকসু নির্বাচন শুরু, ২১ হলের ২২৪ বুথে চলছে ভোট

ছবি: সংগৃহীত
উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলের সংসদ নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এবারের জাকসু নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদে মোট ২৫টি পদে ১৭৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে ১০ জন প্রার্থী লড়ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের মোট ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে, যার মধ্যে ১০টি হল ছাত্রীদের এবং ১১টি হল ছাত্রদের জন্য। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৬৭ জন পোলিং কর্মকর্তা এবং ৬৭ জন সহকারী পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।
ভোটাররা কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি ব্যালটে ভোট দেবেন। ভোট গণনা বিশেষ ওএমআর মেশিনের মাধ্যমে করা হবে। মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৩ জন, এর মধ্যে ছাত্রী ৫ হাজার ৭২৮ জন এবং ছাত্র ৬ হাজার ১৫ জন।
নির্ধারিত সময় সকাল ৯টায় শহীদ রফিক-জব্বার হলে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রযুক্তিগত ও সাংগঠনিক কিছু জটিলতার কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, ব্যালট বক্স ও বুথ স্থাপন চলছিল। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, দ্রুত ভোটগ্রহণ শুরু করা হবে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলে ভোটগ্রহণ শুরুর আগ মুহূর্তে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। নির্বাচন কর্মকর্তারা ব্যালট ও অন্যান্য উপকরণ সাজাচ্ছেন এবং ভোটাররা আসতে শুরু করেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
একেকটি হলে পদসংখ্যা ১৫টি। ২১টি হল সংসদে মোট ৩১৫টি পদে ৪৭৭ জন প্রার্থী লড়ছেন। তবে ছাত্রীদের ১০টি আবাসিক হলে ১৫০টি পদের মধ্যে ৫৯টিতে কোনো প্রার্থী নেই। একজন করে প্রার্থী রয়েছেন ৬৭টি পদে। ফলে মাত্র ২৪টি পদে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: ৩ দশক পর জাকসু ভোট, আট প্যানেলের লড়াই
জাকসু নির্বাচনে মোট আটটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে চারটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল এবং তিনটি আংশিক প্যানেল রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ প্যানেলগুলো হলো:
- ছাত্রদল সমর্থিত পূর্ণাঙ্গ প্যানেল
- ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’
- প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের ‘সম্প্রীতির ঐক্য’
- গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সমর্থিত ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’
- আংশিক প্যানেল দিয়েছে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন, স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ এবং ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফ্রন্টের সংশপ্তক পর্ষদ। এছাড়া অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থীও নির্বাচনে লড়ছেন।
নির্বাচন উপলক্ষ্যে মীর মশরারফ হোসেন হল গেট ও প্রান্তিক গেট ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গেট ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রকার ভাসমান দোকান, টারজান পয়েন্টের দোকান, পুরাতন পরিবহন চত্ত্বর সংলগ্ন দোকান, নতুন কলা ভবন সংলগ্ন মুরাদ চত্বরের দোকান, প্রান্তিক গেইটের উত্তর পাশের কাপড়ের মার্কেট ও প্রধান গেট সংলগ্ন সব দোকান ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
সকল আবাসিক হলের অভ্যন্তরে ক্যান্টিন ও দোকান খোলা রাখা হবে এবং পর্যাপ্ত খাবার মজুদ রাখা হবে। ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত জরুরি বিভাগ (নিরাপত্তা, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ইন্টারনেট) ব্যতীত সকল মোটরসাইকেল চলাচল নিষেধ। শুধুমাত্র শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাকার স্টিকার এবং নির্বাচন কমিশনের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভোট কেন্দ্রে শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকলের সহযোগিতা কামনা করেছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি