বাস্তবতা মেনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন
ছবি: সংগৃহীত
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আয়োজিত সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন।
সিইসি বলেন, গণভোট নিয়ে আইন (অধ্যাদেশ) হওয়ার পরই করণীয় বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তিনি জানান, রাজনৈতিক নেতারা বারবার জানতে চাইছেন—কীভাবে গণভোট হবে, কতটি ভোটবাক্স থাকবে, কীভাবে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
এ বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করেন, আইন হওয়ার পরই এসব বিষয়ে চিন্তাভাবনা ও প্রস্তুতি শুরু করবে কমিশন।
তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে করার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে গণভোটের জন্য আগে আইন প্রণয়ন জরুরি। সেই আইনে উল্লেখ থাকবে কোন বিষয়ে গণভোট হবে এবং কীভাবে তা পরিচালিত হবে।
সংলাপে সিইসি বলেন, রাজনৈতিক বাস্তবতার হিটওয়েভ আমি এখানে বসে অনুভব করি। এটা খুব মসৃণ বাস্তবতা নয়, সামাজিক বাস্তবতাও একই রকম। এগুলো বিবেচনায় নিয়েই আমাদের এগোতে হচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে বেসিক ডেমোক্রেসি পর্যন্ত নির্বাচন প্রক্রিয়া দেখেছেন এবং দীর্ঘ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা হয়েছে। শুধু আমাদের উচিত হবে—এদেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই চিন্তাভাবনা করা।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোরও ওয়াদা প্রয়োজন: সিইসি
নির্বাচন সফল করার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা বড় বলে মন্তব্য করেন সিইসি।
তিনি বলেন, দলগুলো আন্তরিকভাবে কাজ করলে নির্বাচন কমিশনকে বাড়তি চাপ নিতে হয় না।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কমিশনের প্রত্যাশা, সব রাজনৈতিক দল আচরণবিধি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি বজায় রাখবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি, যার প্রধান শর্ত আচরণবিধি মেনে চলা।
সিইসি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়াতে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় নেতৃবৃন্দ যারা সরাসরি তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত, তারা জনগণকে উদ্বুদ্ধ করলে ভোটাররা ব্যাপক সংখ্যায় ভোটকেন্দ্রে আসবেন।
তিনি আরও বলেন, গত ১০-১৫ বছরে ভোটারদের মধ্যে ভোট-বিমুখতা তৈরি হয়েছে। তাই রাজনৈতিক নেতাদের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।
সিইসি জানান, শপথ গ্রহণের পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চললেও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের (ইআরএসসি) কাজের কারণে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা শুরু করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও রাজনৈতিক দলগুলোর লিখিত মতামত পর্যালোচনা করে আচরণবিধি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আচরণবিধি প্রস্তুত করাটা বড় কাজ নয়, প্রতিপালনটাই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ।
সিইসি বলেন, কীভাবে আমরা সবাই মিলে রাজনৈতিক দল, দেশের ভোটার, নির্বাচন কমিশন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একসঙ্গে কাজ করে একটি সুন্দর নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা এগোচ্ছি।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ধীর ও স্থির পথে, কম কথায় বেশি কাজ করে কমিশন সফলভাবে এগোচ্ছে এবং ইনশাল্লাহ একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








