‘ডিটেকশন ও প্রটেকশন সিস্টেম থাকলে এত বড় দুর্ঘটনা হতো না’

ছবি: সংগৃহীত
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় ডিটেকশন ও প্রটেকশন সিস্টেম থাকলে এত বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতো না বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটের সামনে ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রমের সমাপনী ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, “বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে যদি ডিটেকশন ও প্রটেকশন সিস্টেম (সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয়) থাকতো, তাহলে এ ধরনের বড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো। কিন্তু সেখানে এমন কোনো ব্যবস্থা আমরা পাইনি। ভবিষ্যতে এ ধরনের সিস্টেম স্থাপন অত্যন্ত জরুরি।”
তিনি জানান, অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের মোট ৩৭টি ইউনিট কাজ করেছে। শনিবার দুপুর ২টা ১৪ মিনিটে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক আরও বলেন, “আগুনের সূত্রপাত হয় কার্গো ভিলেজের কাস্টমস হাউস অংশে। ভবনটি বিভিন্ন ছোট ছোট কম্পার্টমেন্টে ভাগ করা ছিল। ভেতরে প্রচুর দাহ্য ও বিপজ্জনক (হ্যাজার্ডাস) উপাদান থাকায় অকুপেন্সি লোড ছিল বেশি। ফলে আগুন নির্বাপণে সময় লেগেছে।”
তিনি বলেন, “ভবনটি স্টিল স্ট্রাকচারের তৈরি হওয়ায় ধাতব অংশগুলো প্রচুর তাপ শোষণ করে রেখেছিল। এখনো সেগুলো ধীরে ধীরে তাপ ছাড়ছে, তাই বাইরে থেকে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। তবে নতুন করে আগুন লাগার আশঙ্কা নেই। ধোঁয়া পুরোপুরি না যাওয়া পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট সতর্ক অবস্থায় থাকবে।”
তিনি আরও জানান, “আমরা সময়মতো ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি, কোথাও থেকে কোনো বাধা বা বিলম্ব হয়নি। শাহজালাল বিমানবন্দরের নিজস্ব ফায়ার টিম এবং আমাদের বাহিনী পৃথকভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। নিয়মবিরোধী কোনো কিছু হয়নি।”
তাজুল ইসলাম বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের উচ্চ তাপে কিছু কলামে ফাটল ধরেছে, ভবন কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এখনো আংশিক স্থিতিশীল। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত কাঠামোগত জরিপ করে ঝুঁকি নিরূপণ করা।”
তিনি জানান, আগুনের কারণ এখনও তদন্তাধীন। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা বিস্তারিত অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দেবে।
পরিচালক আরও বলেন, “ওষুধ, ফার্মাসিউটিক্যাল ও অন্যান্য পণ্য থেকে কিছু বাই–প্রোডাক্ট কেমিক্যাল তৈরি হতে পারে, তবে এটি মিরপুরের কেমিক্যাল গোডাউনের মতো তেজস্ক্রিয় কোনো ঘটনা নয়। বাতাসে বিপজ্জনক মাত্রার কিছু পাওয়া যায়নি।”
ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের দুই সদস্য এবং আনসারের কয়েকজন সদস্য হালকা আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আমদানি করা সব পণ্য আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়েছে: উপদেষ্টা বশির
“সিগনিফিকেন্ট কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি,” বলেন তাজুল ইসলাম। “আমরা আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ ঘোষণা করেছি। ধোঁয়া কিছুটা থাকবে, তাই চারটি ইউনিট এখানেই প্রস্তুত থাকবে ভবিষ্যতের যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায়।”
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি