৮৪ প্রস্তাবসহ চূড়ান্ত রূপে জুলাই সনদ প্রকাশ করল কমিশন
ফাইল ছবি
অপেক্ষা শেষে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ এর চূড়ান্ত ভাষ্য। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো পৃথক চিঠিতে আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজন করা হবে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে কমিশনের পক্ষ থেকে দলগুলোর কাছে জুলাই জাতীয় সনদ পাঠানো হয়। তবে সনদে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত কোনো সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সব দলের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ পাঠানো হয়েছে। আগামী শুক্রবার ঐতিহাসিক মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে। আমরা আশা করছি, সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরবর্তী ধাপে উপনীত হতে পারবো।
সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্বে আছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। কমিশন প্রায় ৩ হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা করেছে। অনুষ্ঠানটি দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বে সনদ স্বাক্ষর মাগরিবের নামাজের আগে শেষ হবে। নামাজের বিরতির পর দ্বিতীয় পর্বে প্রজেকশন ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে জুলাই সনদ প্রণয়নের পটভূমি ভিডিও আকারে প্রদর্শন করা হবে।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় মঞ্চ নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় প্রজেকশন ম্যাপিংয়ের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনেরও পরিকল্পনা করছে। তবে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই ধাপের সংলাপের ভিত্তিতে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো নিয়ে তৈরি করা হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ। এই সনদের তিনটি ভাগ আছে: পটভূমি, ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব এবং সনদ বাস্তবায়নের ৭ দফা অঙ্গীকারনামা।
কমিশনের সূত্রে জানা গেছে, সনদের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সুপারিশ প্রণয়নের কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। তাই আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সেটি সরকারের কাছে আলাদাভাবে জমা দেবে কমিশন।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে তৃতীয় ধাপের পঞ্চম দিন তথা শেষ দিনের সংলাপ গত বুধবার (৮ অক্টোবর) শেষ হয়। সেখানে গণভোটের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে দলগুলো একমত হলেও, সময় নির্ধারণে মতপার্থক্য রয়ে যায়। বিএনপি-সহ তাদের যুগপৎ আন্দোলনের অধিকাংশ শরিক জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দেয়। অন্যদিকে জামায়াত, এনসিপি এবং আরও কয়েকটি দল নির্বাচনের আগেই গণভোট চায়। এই নিয়ে পরবর্তীতে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে ঐকমত্য কমিশন আলাদাভাবে বৈঠক করলেও বিষয়টি এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি।
গত ১১ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত ভাষ্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার পাঠানো জাতীয় সনদের পটভূমিতে ভাষাগত পরিবর্তন করা হয়। ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলোর আগে ‘ঐকমত্যের ঘোষণা’ নামে একটি নতুন প্যারা যুক্ত করা হয়। তবে, সেখানকার বাক্যগুলো আগের চূড়ান্ত ভাষ্যেই ছিল।
ঐকমত্যের ঘোষণা: সনদের চূড়ান্ত খসড়ার ঘোষণায় বলা হয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে পারস্পারিক আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আমরা অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা স্ব স্ব দলের পক্ষ থেকে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। এর ‘ক’ ধারায় রাষ্ট্রকাঠামোর (সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশি ব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন) পরিবর্তনের বিষয়ে ঐকমত্যের কথা বলা হয়েছে। ‘খ’ ধারায় কিছু ভিন্নমতসহ বিষয়গুলো সনদে সন্নিবেশিত করতে দলগুলো সম্মত হয়েছে। ‘গ’ ধারায় এটিকে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ হিসেবে ঘোষণা করার কথা বলা হয়েছে।
ইতিহাসের পুনর্গঠন: চূড়ান্ত ভাষ্যে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরির পটভূমিতে ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ, পাকিস্তানি শাসনামলের শোষণ, বঞ্চনার পাশাপাশি আন্দোলন-সংগ্রাম, স্বাধীনতা যুদ্ধ, পঁচাত্তরে বাকশাল গঠন, পটপরিবর্তনসহ বাংলাদেশের ইতিহাসের নানান বিষয় উল্লেখ আছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অংশে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা: আগের ভাষ্যে বলা হয়, ১৯৭৬ সালে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। নতুন করে ১৯৭৬ সাল বাদ দিয়ে লেখা হয়, ‘১৯৭৮ সালে বহুদলীয় রাজনীতির পুনঃপ্রবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণের ফলে ১৯৭৯ সালে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।’
১/১১ সরকারের প্রেক্ষাপট: ‘২০০৬ সালে কয়েকটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ও তার প্রেক্ষাপটে ২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারি ও একটি অস্বাভাবিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়’ - এটি সংশোধিত করে লেখা হয়েছে: ‘২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে লগি-বৈঠা তাণ্ডবে দেশে কয়েকটি নৃশংস রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারি ও একটি অস্বাভাবিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ১/১১ সরকার নামে পরিচিত। ফলে নির্বাচন স্থগিত হয়।’
১৬ বছরে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান: সন্নিবেশ করা নতুন বাক্যে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামোতে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অবারিত সুযোগ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বিগত ১৬ বছরে দলীয় প্রভাবকে প্রতিষ্ঠানিকীকরণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর, জবাবদিহিতাবিহীন ও বিচারহীনতার সহায়ক হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: আগের চূড়ান্ত ভাষ্যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিষয়ে বলা হয়, শাসকগোষ্ঠীর প্রতিহিংসার শিকার হয়ে শিশু ও নারীসহ প্রায় এক হাজার নাগরিক নিহত হয়। সংশোধিত চূড়ান্ত ভাষ্যে এক হাজারের জায়গায় ‘সহস্রাধিক’ বলা আছে। এ ছাড়া ‘স্বৈরাচারী শাসক ও তার দোসররা পরাজিত হয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়’ - এই বাক্যের ‘স্বৈরাচারী শাসকের’ স্থলে ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা’ এবং পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়ার আগে ‘অনেকেই’ শব্দটি যোগ করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠন: সংস্কার কমিশন গঠন অংশে আগের ভাষ্যে বলা হয়েছিল, বিদ্যমান সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রেরিত প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামতের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
সংশোধিত ভাষ্যে বলা হয়, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট গঠিত সরকার প্রথমে ৩ অক্টোবর পৃথক প্রজ্ঞাপনে পাঁচটি কমিশন গঠন করে।’
স্বাধীন পুলিশ কমিশন: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়। খসড়ায় কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া উল্লেখ ছিল না, তবে সংশোধিত ভাষ্যে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে।
দলগুলোর কাছে পাঠানো জুলাই জাতীয় সনদে সংস্কার কমিশনে আলোচনা হওয়া ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত বা ভিন্নমতের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১০ অক্টোবরের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে চূড়ান্ত রোডম্যাপ
- একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দশ বছর মেয়াদ প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন - এই প্রস্তাবে ৩০টি রাজনৈতিক দলের সবাই ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
- ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে মনোনীত করার পক্ষে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বিএনপি জামায়াতসহ ৩১টি রাজনৈতিক দল ও জোট।
- অর্থবিল ও আস্থা ভোট বাদে জাতীয় সংসদে দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত এনসিপিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।
- সুপ্রিম কোর্ট বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষে ঐকমত্য হয়েছে ২৯টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মধ্যে (বিএনপির কিছুটা মত পার্থক্যসহ)।
- রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও বিএনপি-জামায়াতসহ ২৯টি রাজনৈতিক দল ও জোট ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
- ৯টি রাজনৈতিক দলের নোট অব ডিসেন্ট থাকলেও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব নিয়ে সংবিধানের ধারায় পরিবর্তন আনার পক্ষে ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোট একমত হয়েছে।
- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে ঐকমত্য হয়েছে বিএনপি-জামায়াতসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের।
- জাতীয় সংসদের নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০তে উন্নীত করতে বিএনপি-জামায়াত-এনসিপিসহ সবগুলো রাজনৈতিক দল ও জোটের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে।
- সংবিধান বিলুপ্তি ও স্থগিত করণের বিষয়ে ২৯টি রাজনৈতিক দল একমত হলেও ভিন্নমত জানিয়েছে গণফোরাম, বাংলাদেশ জাসদসহ তিনটি দল।
- প্রধানমন্ত্রী যিনি থাকবেন তিনি দলীয় প্রধান বা সংসদ প্রধানের মতো একাধিক পদে থাকতে পারবেন না, এমন বিধানের পক্ষে ২৫টি রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে পৌঁছালেও এ নিয়ে ভিন্নমত দিয়েছে বিএনপিসহ ৫টি রাজনৈতিক দল ও জোট।
- সংসদে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন বিষয়ে শেষ পর্যন্ত মতপার্থক্য রয়ে গেছে। পিআরের পক্ষে জামায়াত এনসিপিসহ ২৩টি রাজনৈতিক দল ও জোট একমত হলেও এতে, ভিন্নমত রয়েছে বিএনপিসহ ৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের।
সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে ৭ দফা অঙ্গীকারনামা প্রস্তুত করা হয়েছে:
১. জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।
২. জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ পূর্ণাঙ্গভাবে সংবিধানে তফসিল হিসেবে বা যথোপযুক্ত ভাবে সংযুক্ত করা হবে।
৩. জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর বৈধতা ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করবে না দলগুলো। একই সাথে এই সনদ বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
৪. গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের দীর্ঘ ১৬ বছরের নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম এবং বিশেষত ২০২৪ সালের অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক তথা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা হবে।
৫. গণঅভ্যুত্থান-পূর্ব ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান-কালে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারগুলোকে যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করা হয়েছে।
৬. জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংস্কারের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান এবং বিদ্যমান আইনসমূহের প্রয়োজনীয় সংশোধন, সহযোজন, পরিমার্জন বা নতুন আইন প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন বা বিদ্যমান বিধি ও প্রবিধির পরিবর্তন বা সংশোধনের অঙ্গীকার করা হয়েছে।
৭. জুলাই জাতীয় সনদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত যে সকল সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য সেগুলো কোনো প্রকার কালক্ষেপণ না করেই দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করবে।
সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা থাকবেন এবং প্রতিটি দল থেকে দুইজন করে প্রতিনিধি সনদে সই করবেন। এরই মধ্যে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দুজন করে প্রতিনিধির নাম ঐকমত্য কমিশনে পাঠিয়েছে। ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে যে ৪৭টি সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত, তা সংসদের প্রয়োজন হবে। বাকি ৩৭টি সংস্কার প্রস্তাব নির্বাহী আদেশ বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে অঙ্গীকারনামায়। যে সকল সংস্কার প্রস্তাবে দলগুলো নোট অব ডিসেন্ট বা ভিন্নমত দিয়েছে, সেই দল ক্ষমতায় গেলে তা মানতে বাধ্য নয়।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








