গাজায় আরও ৮০ ফিলিস্তিনি নিহত, অনাহারে প্রাণ গেল আরও ১৪ জনের
ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে অন্তত আরও ৮০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি, অবরোধজনিত দুর্ভিক্ষে নতুন করে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে দুজন শিশু রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনের ফলে অপুষ্টিজনিত কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৭ জনে, যাদের মধ্যে ৮৮ জনই শিশু।
গাজায় চলমান খাদ্য সংকটের ভয়াবহতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। চলতি বছরের মার্চে ইসরায়েল গাজার ওপর পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে। যদিও মে মাসে কিছুটা শিথিলতা আনা হয়, তবে এখনো পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে পারছে না। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর একাধিকবার সতর্কতা সত্ত্বেও সংকট নিরসনে কার্যকর অগ্রগতি নেই।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ ল্যাজারিনি বলেন, “আমাদের সহকর্মীরা গাজায় এমন মানুষ দেখছেন, যারা না বেঁচে আছে, না মরেছে— যেন হাঁটতে থাকা লাশ।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু ক্ষোভ ও নিন্দা নয়— এখন অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা, দুর্ভিক্ষ রোধ এবং বন্দিদের মুক্ত করার পদক্ষেপ নিতে হবে।”
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্কটল্যান্ড সফরে সাংবাদিকদের বলেন, “গাজায় প্রকৃত অর্থেই দুর্ভিক্ষ চলছে এবং এর দায় ইসরায়েলকেই বহন করতে হবে।” তিনি আরও জানান, সেখানে “বাউন্ডারিবিহীন খাদ্য কেন্দ্র” স্থাপন করে সহজে ত্রাণ পৌঁছানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে, যা অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে পরিচালিত হবে।
অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার এক্স-এ দেওয়া পোস্টে স্বীকার করেন, “গাজার পরিস্থিতি কঠিন” এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে ইসরায়েল কাজ করছে। তবে তিনি দাবি করেন, “গাজায় কোনো দুর্ভিক্ষ নেই।”
আরও পড়ুন: পহেলগাঁও হামলার মাস্টারমাইন্ডসহ ৩ সন্ত্রাসী নিহত
ইসরায়েল নতুন করে ত্রাণবাহী করিডোর খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিলেও, আল জাজিরার গাজা প্রতিনিধি তারেক আবু আজজুম জানান, এই তথাকথিত “মানবিক বিরতি” আসলে অতি স্বল্প সময়ের এবং নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ, তাও আন্তর্জাতিক কোনো তদারকি ছাড়াই পরিচালিত হয়।
এদিকে গাজায় শিশু খাদ্যের সংকটও চরম আকার ধারণ করেছে। আল-শিফা হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, অপুষ্টির কারণে শিশু মোহাম্মদ ইব্রাহিম আদাস মারা গেছে, কারণ তার জন্য প্রয়োজনীয় ফর্মুলা দুধ পাওয়া যায়নি।
গাজা সরকারের গণমাধ্যম অফিস জানায়, এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার শিশু মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে, কারণ গত ১৫০ দিনে ইসরায়েল শিশু খাদ্য ঢুকতে দেয়নি। এক বিবৃতিতে তারা অবিলম্বে ও শর্তহীনভাবে সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়ার দাবি জানায়, যেন প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে পারে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি








