রিয়া সেনের নীরব সংগ্রামের গল্প
ছবি: সংগৃহীত
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে তামিল ছবি ‘তাজমহল’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক। দুই দশকের বেশি সময়ে রিয়া কাজ করেছেন ৩০টির বেশি চলচ্চিত্রে। ‘স্টাইল’, ‘কেয়ামত’, ‘ঝংকার বিটস’, ‘শাদি নম্বর ওয়ান’, ‘আপনা সাপনা মানি মানি’- এমন বহু হিট ছবিতে তিনি হয়ে ওঠেন পরিচিত মুখ। বাংলাদেশের সিনেমাতেও দেখা গেছে তাকে। এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে রিয়া জানান, ক্যারিয়ারের শুরুতে কাজ নিয়ে তিনি উৎসাহে ভরপুর ছিলেন। কিন্তু দ্রুতই বুঝতে পারেন, করা চরিত্রগুলো তার সঙ্গে মানাচ্ছে না।
বলিউডে রয়েছে তার সাবেক তারকা মর্যাদা, হাতে ছিল পরপর বিগ প্রজেক্ট, কিন্তু সবকিছুই যেন থমকে গেল একসময়। পরিবারের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আর নিজস্ব প্রতিভা সঙ্গী হয়েও রিয়া সেনের ক্যারিয়ারের গতি কেন কমে এসেছে? দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে এবার নিজেই মুখ খুললেন তিনি।
এক সাক্ষাৎকারে এই অভিনেত্রী জানালেন, খ্যাতি আসার বয়সটাই ছিল অতি অল্প—তার প্রস্তুতি ছিল না, আর ইন্ডাস্ট্রির চকচকে আলোয় নিজেকে টিকিয়ে রাখা আরও কঠিন হয়ে পড়েছিল সে সময় । যে রাজকীয় যাত্রা একসময় তাকে নতুন প্রজন্মের আইকন বানিয়েছিল, সেটিই পরিণত হয় ভীতিকর চাপের বোঝায়। সম্প্রতি সেই নীরব সংগ্রামের গল্পই প্রকাশ করছেন রিয়া।
রিয়া বলেন, আমি যে চরিত্র করছিলাম, তাতে আমি স্বচ্ছন্দ ছিলাম না। তখন বলিউডে সবকিছুই নির্ভর করত গ্ল্যামারের ওপর- কী পোশাক পরছি, কী মেকআপ করছি এসব নিয়ে চাপ ছিল প্রচণ্ড।
আরও পড়ুন: তিশার নেতৃত্বে নতুন অনলাইন আন্দোলন ‘মাই নাম্বার, মাই রুলস’
অল্প বয়সেই ‘সাহসী অভিনেত্রী’র তকমা পাওয়াটা তাকে মানসিকভাবে আঘাত করেছিল। তিনি বলেন, আমি তখন স্কুলে পড়তাম। অথচ তখন থেকেই আমাকে লেবেল দেওয়া শুরু হয়। দীর্ঘসময় ধরে গ্ল্যামারাস ইমেজ ধরে রাখার চাপ তাকে আরও ক্লান্ত করে তোলে। অবশেষে সচেতনভাবেই থামিয়ে দেন বলিউডের কাজ।
যা বলিউডের জন্য ‘ক্ষতি’, তা হয়ে ওঠে বাংলা সিনেমার জন্য লাভ। রিয়া নতুনভাবে আবিষ্কার হন ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘নৌকাডুবি’ (২০১১) ছবিতে। এরপর ‘জাতিস্মর’, ‘হিরো ৪২০’- একাধিক ছবিতে কাজ করে নিজের অভিনয়শক্তি নতুন করে প্রমাণ করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলা ছবিতে আমি আমার নিজের মতো হতে পেরেছি। পরিচালকরা বুঝতে পেরেছেন আমি কী দিতে পারি।
স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের উত্থান রিয়ার ক্যারিয়ারে নতুন দিগন্ত খুলে দেয়। ‘রাগিণী এমএমএস: রিটার্নস’, ‘পয়জন’, ‘মিসম্যাচ’- এর মতো ওয়েব সিরিজে দেখা গেছে তাকে।
রিয়ার কথায়, ওটিটির কাজ আমাকে নানা চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দিচ্ছে। এখানে আমি নিজেকে বেশি মানানসই মনে করি।
২০০৫ সালে রিয়া সেন-এর ব্যক্তিগত একটি ভিডিও ফাঁস হয়, যা নিয়ে তৈরি হয় তুমুল বিতর্ক। সেই সময় অনেক ছবির প্রস্তাব হারান তিনি। অনেকের মতে, এ ঘটনাই তার বলিউড ক্যারিয়ারকে বড়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এদিকে চলতি বছর তাকে দেখা গেছে হিন্দি ছবি ‘নাদানিয়া’–তে। আর এখন মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে তার ওয়েব সিরিজ ‘পরিণীতা’।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি








