আবার ছড়িয়ে পড়ছে করোনা: মাস্ক ও পরীক্ষা বাধ্যতামূলক

ছবি: সংগৃহীত
দেশে হঠাৎ করে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় আবারও সীমিত পরিসরে করোনা পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০১টি নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যা ১২.৮৭ শতাংশ শনাক্তের হার নির্দেশ করে— বর্তমান পরিস্থিতিতে এটিকে ‘উচ্চ ঝুঁকির’ সংকেত বলেই দেখছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার (১১ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশীদ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, আগামী ১০ দিনের মধ্যে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা হবে, তবে তা আপাতত সীমিত পরিসরে পরিচালিত হবে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে যেসব মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে আরটি-পিসিআর ল্যাব রয়েছে, সেখানেই পরীক্ষা চালু করা হবে।
এ লক্ষ্যে স্থানীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে টেস্ট কিট সংগ্রহ শুরু হয়েছে এবং সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপোকে (সিএমএসডি) বিদেশ থেকেও কিট আমদানির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরীক্ষা চালুর প্রথম ধাপে নিচের হাসপাতালগুলোতে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে:
- ঢাকা মেডিকেল কলেজ
- মুগদা জেনারেল হাসপাতাল
- চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
- রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসমূহ
শর্ত অনুযায়ী কেবল যেসব স্থাপনায় আরটি-পিসিআর ল্যাব রয়েছে, সেখানেই এই সুবিধা মিলবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে তিনজনের করোনা শনাক্ত
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করোনা পরীক্ষা শুধুমাত্র উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের জন্যই চালু করা হবে। পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত বিবেচিত হবেন:
যাদের শরীরে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ কোভিড–১৯ এর উপসর্গ রয়েছে
কিংবা যাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসক পরীক্ষার পরামর্শ দেবেন
অধ্যাপক হালিমুর রশীদ আরও জানান, সংক্রমণের হার যদি আরও বাড়ে, তাহলে পরীক্ষার সংখ্যা ও এলাকা বাড়ানোর চিন্তা করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর একইদিন দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত হয়েছে এবং সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে এ সংক্রমণ বাংলাদেশে ঢোকার আশঙ্কায় সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং এবং আইএইচআর ডেস্কগুলোকে সক্রিয় করা হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৭টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি করেছে:
১. জনসমাগম এড়িয়ে চলুন, একান্ত প্রয়োজন হলে মাস্ক ব্যবহার করুন
২. শ্বাসতন্ত্র সুরক্ষায় নিয়মিত মাস্ক পরুন
৩. হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখুন
৪. ব্যবহৃত টিস্যু ঢাকনাযুক্ত ঝুড়িতে ফেলুন
৫. ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান-পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে হবে
৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ-নাক-মুখ স্পর্শ না করা
৭. আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে অন্তত ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা
করোনা মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতির বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরটি-পিসিআর ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার পাশাপাশি টিকা, প্রয়োজনীয় ওষুধ, অক্সিজেন, হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, আইসিইউ, ভেন্টিলেটর এবং কোভিড ডেডিকেটেড ইউনিটগুলোর প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি