পথের পাঁচালীর ছয় দশক, এখনও সত্যজিৎ
তখন সিনেমায় মাত্র হাত দিয়েছেন তরুণ পরিচালক সত্যজিত্ রায়। ১৯৫৫ সালের ২৬ আগস্ট মুক্তি পায় তার প্রথম সিনেমা পথের পাঁচালী। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস পথের পাঁচালী অবলম্বনে তৈরি হয় সিনেমাটি। খুব সরল ধাচের, কম বাজেটের সিনেমাটি প্রকাশের পর পরই স্থান করে নেয় পৃথিবীর সেরা সিনেমার তালিকায়। যা আজও অটুট আছে।
ওই বছর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য ভারতের জাতীয় পুরস্কার পান সত্যজিৎ। ৬০ বছরে পড়েছে ‘পথের পাঁচালী’। কিন্তু এখনো ভারতবর্ষের সিনেমা বলতে পথের পাঁচালীকেই চেনে বিশ্ব।
এ ছবির নির্মাণকালীন বাজেট ছিল তিন হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ তৎকালীন মাত্র দেড় লাখ ভারতীয় রুপি। সিনেমাতে ছিল না জনপ্রিয় কোনো তারকা। কিন্তু তা সত্ত্বেও সমালোচক আর দর্শকদের প্রশংসার কমতি ছিল না। পরিচালকের দক্ষতার কারণেই তা সম্ভব হয়।
১৯৫৬ সালে কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বেস্ট হিউম্যান ডকুমেন্ট পুরস্কার পায় সিনেমাটি। সে বছর ওসিআইসি পুরস্কারসহ আরও কিছু পুরস্কার আসে সত্যজিতের হাতে। এমনকি জীবনের শেষ সময় অস্কারে বিশেষ সম্মাননা পান তিনি, যার পেছনে ছিল 'পথের পাঁচালী’।
এ ছবি থেকেই সৃষ্টি হয় 'অপু' নামের আরেক কালজয়ী চরিত্র। পরিবর্তীতে অপু ত্রয়ী সিরিজের অপর দুটি ছবি অপরাজিত (১৯৫৬) ও অপুর সংসার (১৯৫৯) মুক্তি পায়। যা বাংলা সিনেমায় যোগ করে নতুন মাত্রা। বাঙালিদের কাছে পথের পাঁচালীর দৃশ্যায়ন কোনও মহাকাব্যের থেকে কম কিছু নয়। কাশবনের ভিতরে অপু-দূর্গার সেই ছোটাছুটি কিংবা গ্রাম অঞ্চলের সেই শত চেনা দৃশ্যও নতুন করে দর্শকদের মুগ্ধ করে।
তরুণ পরিচালকদের কাছে পথের পাঁচালী আজও সেরা উদাহরণ। কম টাকায়, অখ্যাত তারকাদের নিয়েই সেরা সিনেমা সম্ভব, সেটাই প্রমাণ করেছিলেন সত্যজিৎ।
নিউজবাংলাদেশ.কম/আরবিএস
নিউজবাংলাদেশ.কম








