ফেসবুকে ছবি শেয়ার নিয়ে হাজীগঞ্জে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষে আহত ৩৫
ছবি: সংগৃহীত
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ফেসবুকে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিকৃত ছবি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (০৩ অক্টোবর) সকালে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের পালিশারা গ্রামে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
গুরুতর আহতদের হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চাঁদপুর সদর হাসপাতাল ও শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব কাজী জসিম জানান, গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও পালিশারা শাহ মিরান মিরা বাড়ি জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বৃহস্পতিবার রাতে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার বিকৃত ছবি শেয়ার করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
শুক্রবার সকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাওলানা ইলিয়াসকে বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে জামায়াতের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে পুরো পালিশারা গ্রাম ও বাজার এলাকায়।
বিএনপির আহত নেতাকর্মীরা হলেন নেছার আহমেদ চৌধুরী (সাবেক উপজেলা যুবদল সদস্য), সাইফুল মিজি (ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক), আনোয়ার হোসেন সর্দার, কামাল হোসেন (ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি), সাদ্দাম হোসেন, কুদ্দুস সর্দার (স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি), মহসিন হোসেন তুষার, রাসেল ভূঁইয়া, লিটন হোসেন, আলামিন হোসেন, রাসেল হোসেন, মহিন হোসেন, জনি হোসেন, আব্দুর রহিম, নূর হোসেন, মেহেদী হাসান, স্বপন, ফয়সাল।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে নৌকাডুবি, দুই কলেজছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
জামায়াতের আহত নেতাকর্মীরা হলেন হাফেজ মো. আব্দুল মোতালেব (সাবেক ইউনিয়ন আমির), হাফেজ মো. ইলিয়াস হোসেন (পোস্টদাতা), ফরিদুল ইসলাম, হাফেজ আহমেদ (৪ নম্বর ওয়ার্ড আমির), আনোয়ার হোসেন (১ নম্বর ওয়ার্ড আমির), ফয়সাল (সেক্রেটারি), রাশেদ হোসেন, সজিব হোসেন, শরীফ পাটওয়ারী, রাজু, শামীম হোসেন, সাদ্দাম, মনু।
মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক থেকে অসাবধানবশত একটি ছবি শেয়ার হয়ে যায়। বিষয়টি জানার পর আমি তা ডিলিট করি এবং দুঃখ প্রকাশ করে আরেকটি পোস্ট দিই। আমার মোবাইলটি ঘরে থাকে, অনেক সময় বাচ্চারা ব্যবহার করে, তারাও হয়তো শেয়ার করতে পারে।
উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মোজাম্মেল হোসেন পরান বলেন, আমি বিষয়টি নিজে দেখছি। যা হয়েছে, এজন্য ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। তারপরও হামলা করাটা দুঃখজনক।
অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ রহিম পাটওয়ারী বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ও নেত্রী রুমিন ফারহানার ছবিকে বিকৃত করে মাওলানা ইলিয়াস ফেসবুকে পোস্ট করেন। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানালে জামায়াতের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ জানান, আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার বিষয়টি উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হয়েছে। দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকা শান্ত রয়েছে। তবে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








