News Bangladesh

স্টাফ রিপোর্টার || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:০১, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আপডেট: ১৫:০১, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ব্যাংক খাতে ঢালাও জালিয়াতির সুযোগ বন্ধ হয়েছে: টিআইবি

ব্যাংক খাতে ঢালাও জালিয়াতির সুযোগ বন্ধ হয়েছে: টিআইবি

ছবি: সংগৃহীত

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, কিছুটা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। ব্যাংক খাত ছিল অর্থপাচারের অন্যতম খাত। সেখানে কিছু সংস্কার হয়েছে, যে কারণে আগে ঢালাওভাবে এখানে জালায়াতির সুযোগ ছিল, সেটা বন্ধ হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) আন্তর্জাতিক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপারসন ফ্রাঁসোয়া ভ্যালেরিয়াঁর এর বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে টিআইবি। তিনদিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন ফ্রাঁসোয়া ভ্যালেরিয়াঁর।

অর্থপাচার কমেছে কি না জানতে চাইলে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যে অ্যাক্টররা জড়িত ছিল, তাদের অনেকেই বিচারের মুখোমুখি হয়েছে, কিংবা দেশের বাইরে আছে। তাদের সেই ভূমিকা নেই বললেই চলে। যদিও নতুন অ্যাক্টরের জন্ম হয়নি বা হচ্ছে না, এটা আমরা বলতে পারব না।

আরও পড়ুন: আস্থা পুনরুদ্ধারে প্রথম কাজ ইসির

ব্যাংক খাতে আরও অনেক বেশি সংস্কারের প্রয়োজন আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ খাতে উল্লেখযোগ্য সংস্কার হয়েছে-পরিবর্তন হয়েছে। যে পদ্ধতি মোটা দাগে বিশাল অর্থপাচার হতো সেটা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

যত অর্থ ও প্রচেষ্টা ব্যবহার করা হচ্ছে পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য, তার চেয়ে বেশি অর্থ ও প্রচেষ্টা ব্যবহার করা প্রয়োজন অর্থপাচার প্রতিরোধ করার জন্য।

প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ থেকেও অর্থপাচার হতো জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে না এসে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা আসতো। এর মাধ্যমে টাকা পাচার হতো। সেটাও মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। মিস ইনভয়েসিং বা আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের চালান জালিয়াতির মাধ্যমে যে অর্থপাচার হয়; সেটা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হয়েছে, সেটা বলতে পারবো না।

দুদক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে অর্থপাচার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, অর্থপাচার যেন না হয় সেটিতে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

এ সময় ফ্রাঁসোয়া ভ্যালেরিয়াঁর বলেন, সাংবাদিকরা না থাকলে গণতন্ত্র থাকে না, আর গণতন্ত্র ছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে লড়াইও সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, আমি গত বছর থেকেই ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন নিবিড়ভাবে অনুসরণ করেছি, যেখানে তরুণ, নারী, শ্রমজীবীসহ সাধারণ মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল।

তিনি বলেন, যখন আমরা সারাবিশ্বে স্বৈরতন্ত্রের উত্থানের কথা শুনছি, তখন বাংলাদেশে ঘটেছে উল্টোটা। এজন্যই আমাদের বৈশ্বিক নাগরিক সমাজ বাংলাদেশকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখছে। এখানে সংস্কার কার্যক্রম চলছে—সংস্কার কমিশন, ঐকমত্য কমিশন ও অন্যান্য পদক্ষেপ যেগুলোর অনেকগুলো টিআই বাংলাদেশের সুপারিশে হয়েছে। এই সংস্কারগুলো টেকসই হতে হবে। রাষ্ট্রের কাঠামো ও ক্ষমতার প্রয়োগে গভীর পরিবর্তন দরকার। আমি বিশ্বাস করি নাগরিক সমাজের সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে এই প্রচেষ্টা সফল হবে।

স্বৈরশাসনের পতনের পর মানুষ আশা করছে সরকার দুর্নীতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনবে। এই পরিস্থিতিতে কি টিআই-এর কাজ বা প্রাসঙ্গিকতা বাংলাদেশে কমে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, একেবারেই না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বলতে হয় যে দুর্নীতির সমস্যা এখনো বাংলাদেশে আছে—যেমনটা পৃথিবীর সব দেশেই থাকে। যেখানে ক্ষমতা থাকবে, সেখানেই ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রলোভন থাকবে। তাই টিআই-এর কাজ কখনো শেষ হয় না।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়