পরিবর্তন হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার নাম
ফাইল ছবি
বিদেশি ক্রেতা ও দর্শনার্থীর আকর্ষণ কমে যাওয়ায় এবং মেলার আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ইমেজ দুর্বল হয়ে পড়ায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-এর নাম পরিবর্তন করে ঢাকা বাণিজ্য মেলা (ডিটিএফ) রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১৮ আগস্ট) বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ১৪৮তম পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ইপিবির কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ১৯৯৫ সাল থেকে শুরু হওয়া এই মেলার মূল লক্ষ্য ছিল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে উন্নত মানের পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করা এবং স্থানীয় বাজারের সঙ্গে তাদের পরিচয় করানো।
কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা গেছে, অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান সরাসরি অংশগ্রহণ না করে স্থানীয় এজেন্ট বা ব্যক্তির মাধ্যমে মেলায় অংশ নিচ্ছে। এর ফলে প্রদর্শিত পণ্য ও সেবার মান যাচাই করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক সময় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যকেই বিদেশি ব্র্যান্ড হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা ক্রেতাদের প্রতারিত করছে। এই পরিস্থিতি মেলার আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে এবং বিদেশি ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ কমিয়ে দিচ্ছে। একই কারণে স্থানীয় উদ্যোক্তারাও বৈশ্বিক প্রবণতা ও নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছেন। এ সকল বিষয় বিবেচনা করেই মেলার নাম থেকে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে বিদেশে ৪০ হাজার কোটি টাকার অর্থপাচার শনাক্ত
সভায় রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণের জন্য ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের মেলা ক্যালেন্ডার এবং ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরের আংশিক মেলা ক্যালেন্ডার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিদেশে আয়োজিত মেলায় অংশগ্রহণের আগে প্রতিটি মেলা সম্পর্কে আমাদের একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ থাকা দরকার।
তিনি জোর দেন যে, দেশের পণ্যের বাজার যেখানে সম্প্রসারণের প্রয়োজন, সেখানেই কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। কেবল অংশগ্রহণই যথেষ্ট নয়, দেশের উন্নতি ও ব্যবসা বৃদ্ধি যাতে হয় সেদিকেও মনোযোগ দিতে হবে।
এছাড়াও, রপ্তানিমুখী শিল্পখাত ও উৎপাদকদের জন্য বৈশ্বিক বাজার সম্প্রসারণ এবং সরকারের বাজার বহুমুখীকরণ কৌশলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে একটি স্বতন্ত্র আন্তর্জাতিক সোর্সিং ফেয়ার আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সভায় ‘সোর্সিং বাংলাদেশ ২০২৫’ নামের এই মেলাটি নভেম্বরে আয়োজনের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সোর্সিং মেলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, এই ধরনের মেলা আয়োজন না করলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশীয় পণ্যের পরিচিতি বাড়বে না এবং আমাদের সক্ষমতাও তৈরি হবে না। তিনি বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে সোর্সিং মেলার প্রচার বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) আব্দুর রহিম খান, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, এবং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কামরান তানভীর রহমান।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








