চট্টগ্রামে গুলিতে আহত বিএনপি প্রার্থী, ফখরুলের নিন্দা ও ক্ষোভ
ফাইল ছবি
চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ গণসংযোগকালে দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সরওয়ার বাবলা নামে একজন নিহত হয়েছেন এবং আরও অন্তত দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার (০৫ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত অবস্থায় এরশাদ উল্লাহকে উদ্ধার করে স্থানীয় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে তার চিকিৎসা চলছে। নিহত সরওয়ার বাবলার লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গভীর উদ্বেগ, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর পতনের পর দুষ্কৃতকারীরা আবারও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ নৈরাজ্যের মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। দুষ্কৃতকারীদের নির্মম হামলায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত এরশাদ উল্লাহসহ আরও একাধিক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধের ঘটনা সেই অপতৎপরতারই নির্মম বহিঃপ্রকাশ।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতেই এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তাই এসব দুষ্কৃতকারীদের কঠোর হস্তে দমনের বিকল্প নেই।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ দেশের মানুষের জানমাল রক্ষায় দলমত-নির্বিশেষে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নইলে ওত পেতে থাকা দুষ্কৃতকারীরা মাথাচাড়া দিয়ে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে নিহত ১
বিএনপি মহাসচিব এরশাদ উল্লাহসহ গুলিবিদ্ধদের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান। একইসঙ্গে তিনি আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত এরশাদ উল্লাহ গণসংযোগকালে দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে আহত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন। তথ্যমতে, এ সময় আরও একাধিক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।
দলটির সহ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে জানানো হয়, বিএনপি নেতৃত্ব মনে করছে—এ হামলার মাধ্যমে নির্বাচনের আগে দেশে নৈরাজ্য ও আতঙ্ক ছড়িয়ে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চলছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর দেশের স্থিতিশীলতা নস্যাৎ করতে এক শ্রেণির দুষ্কৃতকারী পুনরায় মাথাচাড়া দিয়েছে। এদের কঠোরভাবে দমন না করলে জাতি নতুন করে বিপদের মুখে পড়বে।
বিএনপি মহাসচিবের ভাষায়, দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সকল দেশপ্রেমিক নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
চট্টগ্রাম-৮ আসনটি চান্দগাঁও ও বোয়ালখালী এলাকা নিয়ে গঠিত। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি এখান থেকে এরশাদ উল্লাহকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি বুধবার বিকেলে স্থানীয় সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগে বের হলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
দলীয় সূত্র জানায়, গুলিবিদ্ধদের মধ্যে আরও কয়েকজন স্থানীয় কর্মীও রয়েছেন। হামলার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিএনপি বলছে, এই হামলার মাধ্যমে “চট্টগ্রামে নির্বাচনী সহিংসতার সূচনা ঘটানো হয়েছে।” দলটি অবিলম্বে ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








