News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:০৮, ৫ নভেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে নিহত ১

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে নিহত ১

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম-৮ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনী গণসংযোগে দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিনজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সরওয়ার হোসেন ওরফে বাবলা (৪৩) নামে একজন পরে হাসপাতালে মারা যান।

বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নগরের বায়েজিদ থানার চালিতাতলী ও হামজারবাগ এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। 

এ সময় এরশাদ উল্লাহ মনোনয়ন পাওয়ার পর স্থানীয় জনতার সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছিলেন। হঠাৎ দুর্বৃত্তরা গুলি চালালে তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। 

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তিনি আশঙ্কামুক্ত।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের প্রার্থী জনসংযোগ করছিলেন, সেখানে শত শত সাধারণ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।

গুলিবিদ্ধদের মধ্যে সরওয়ার হোসেন ওরফে বাবলা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। 

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির বলেন, গুলিতে আহত সরওয়ার মারা গেছেন।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। আমরা ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি। কারা জড়িত, তা শনাক্তে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।

আরও পড়ুন: গণসংযোগের সময় বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ

বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, এরশাদ উল্লাহ বায়েজিদ এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা এসে গুলি চালায়। এতে তিনি ও আরও দুজন গুলিবিদ্ধ হন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত সরওয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যা–সহ অন্তত ১৮টি মামলা রয়েছে। তিনি একসময় শিবির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত সাজ্জাদ আলীর অনুসারী ছিলেন। ২০১৫ সালের পর থেকে তিনি সেই গোষ্ঠী থেকে সরে যান। 

পুলিশ আরও জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের নির্দেশে সরওয়ারকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়।

এর আগে গত ৩০ মার্চ নগরের বাকলিয়া অ্যাকসেস রোড এলাকায় একটি প্রাইভেট কারে গুলি চালিয়ে সরোয়ারকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। সে সময় গাড়িতে থাকা দুজন নিহত হন, তবে সরোয়ার প্রাণে বেঁচে যান। সেই মামলায় গ্রেফতার আসামিরা পুলিশকে জানান, ছোট সাজ্জাদের নির্দেশেই সরোয়ারকে টার্গেট করা হয়েছিল।

ছোট সাজ্জাদ বর্তমানে বিদেশে পলাতক। তিনি সাজ্জাদ আলীর বাহিনী পরিচালনা করেন, যারা বায়েজিদ, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও ও হাটহাজারী এলাকায় অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

সরোয়ার হোসেন এক মাস আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তার বিয়েতে বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহসহ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্ত হয়ে বিএনপির বিভিন্ন সমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে তাকে।

এ ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

তিনি বলেন, এ ধরনের হামলা গণতান্ত্রিক পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করে।

চট্টগ্রাম-৮ আসনে নির্বাচনী পরিবেশে এমন সহিংস ঘটনায় স্থানীয় জনমনে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। পুলিশ বলছে, ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়