বিএনপি এককভাবে সরকার গঠনের অবস্থানে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফাইল ছবি
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি এককভাবে সরকার গঠনের অবস্থানে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এই আস্থা প্রকাশ করেন।
দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে লন্ডনে পরিবারসহ নির্বাসিত জীবন কাটানো তারেক রহমান জানান, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে তিনি শিগগিরই দেশে ফিরবেন। তিনি বলেন, “আমি মনে করি, আমার বাংলাদেশে ফেরার সময় খুব সন্নিকটে।”
তারেক রহমান মনে করেন, বাংলাদেশে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন ঘটানো ছাত্রনেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থান সম্পূর্ণ হবে না। “আমরা নিশ্চিতভাবে জিতব। দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এককভাবে সরকার গঠনের অবস্থানে আমরা আছি,”— বলেন তিনি।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের যে দলই পরবর্তী সরকার গঠন করুক না কেন, তাকে ভঙ্গুর অর্থনীতি সামাল দিতে হবে। তৈরি পোশাক খাত যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের মুখে পড়েছে এবং প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কও অবনতির দিকে।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে অর্থনীতিকে তৈরি পোশাক রপ্তানির বাইরে বৈচিত্র্যপূর্ণ করবে। এজন্য তিনি বাংলাদেশকে আমাজন, ইবে ও আলিবাবার মতো বৈশ্বিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানান।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সবকিছুর আগে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার সময়ের একপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুনভাবে শুরু করতে হবে।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করেছেন। আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ দেওয়া হবে কিনা—এ বিষয়ে সরাসরি কিছু না বললেও তারেক রহমান বলেন, “যদি তারা দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে আওয়ামী লীগ কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে?”
তিনি আরও জানান, বিএনপি অন্যান্য দলকে সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠনে প্রস্তুত। এর মধ্যে গত বছরের ছাত্রনেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থান থেকে গড়ে ওঠা নতুন একটি দলকেও স্বাগত জানাবে বিএনপি।
“তারা তরুণ, তাদের একটি ভবিষ্যৎ আছে,”— বলেন তারেক রহমান।
আরও পড়ুন: শাপলা প্রতীকেই জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে এনসিপি: সারজিস আলম
তারেক রহমান প্রতিশ্রুতি দেন, ক্ষমতায় গেলে প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসবে বিএনপি। তিনি জানান, গত আগস্ট থেকে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের অভিযোগে দলের সাত হাজার সদস্যকে বহিষ্কার বা শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নির্বাচিত হলে তিনি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশাসন যে বিদেশে পাচার হওয়া শত শত কোটি ডলার উদ্ধারে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তা অব্যাহত রাখবেন।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দুর্নীতি ও বিরোধীদের দমন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুমের মতো ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জনমত জরিপে বিএনপি এগিয়ে রয়েছে এবং ফেব্রুয়ারির ভোটের পর তারেক রহমানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি