News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:৪০, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
আপডেট: ১৬:৫৭, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

শাপলা প্রতীকেই নির্বাচনে যাবে এনসিপি: সারজিস

শাপলা প্রতীকেই নির্বাচনে যাবে এনসিপি: সারজিস

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আগামী জাতীয় নির্বাচনে শাপলা প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। 

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) নেত্রকোনা শহরের বড়বাজার এলাকার শালথী রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড পার্টি সেন্টারে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সমন্বয় কমিটির সভা ও সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সারজিস আলম বলেন, আগামী নির্বাচনে এনসিপি শাপলা প্রতীক নিয়ে মাঠে নামছে এবং প্রয়োজনে সরকার গঠনে নির্ণায়ক ভূমিকা রাখবে। 

তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন, সচিব ও আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে শাপলা প্রতীক গ্রহণে কোনো আইনগত বাধা নেই। 

আমরা প্রত্যাশা করছি, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কোনো প্রভাবিত সিদ্ধান্ত নেবে না এবং আমরা শাপলা প্রতীকেই নির্বাচন করব, বলেন তিনি।

এনসিপির অবস্থান প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, আমরা মনে করি, আগামীর বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পথে এনসিপি নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করবে। আগামীতে কারা সরকার গঠন করবে, সে ক্ষেত্রেও এনসিপি নির্ণায়কের ভূমিকায় থাকবে। 

তিনি বিএনপি ও জামায়াতের রাজনৈতিক ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, বিএনপি এককভাবে সরকার গঠন করতে পারেনি। জামায়াতও দীর্ঘদিন রাজনীতি করেও বৃহৎ পরিসরে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেনি। সে ক্ষেত্রে এনসিপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ফ্যাসিস্ট কাঠামোর সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যাতে সুবিধা না পায়, তা নিশ্চিত করা। এজন্য সকল রাজনৈতিক দলকে কৌশলগতভাবে কাজ করতে হবে। 

অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট কাঠামোর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক উপড়ে ফেলা যায়নি; সেই কাঠামো এখনও টিকে আছে।

‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ছাড়া কারও জন্যই সেফ এক্সিট নেই। কিছু উপদেষ্টা যেনতেনভাবে নির্বাচন দিয়ে সেফ এক্সিট নিতে চাইলেও তা হতে দেওয়া হবে না। 

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে যে ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতন করা হয়েছে, সেই খুনি ও পতিত সরকারের রাঘববোয়ালদের বিচারের মুখোমুখি না করে যেন কেউ সেফ এক্সিট নিতে না পারে।

আরও পড়ুন: শাপলা প্রতীকে আইনগত কোনো বাধা নেই এনসিপির: সারজিস

নির্বাচনে অংশগ্রহণের শর্ত হিসেবে তিনি বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার দৃশ্যমান হলে নির্বাচনে অংশ নিতে আমাদের আপত্তি নেই। 

তিনি জানান, একটি কনফারেন্সে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাদের জানিয়েছেন, শেখ হাসিনাসহ যাদের বিরুদ্ধে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে প্রমাণ রয়েছে, তাদের বিচারের রায় ডিসেম্বরের মধ্যে কার্যকর হবে। 

আমরা সেই আস্থার অপেক্ষায় আছি। যদি সেটি বাস্তবায়ন হয়, ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব, বলেন সারজিস আলম।

পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়নযোগ্য। এনসিপি মনে করে, উচ্চকক্ষে পিআর সফল হলে ভবিষ্যতে নিম্নকক্ষেও তা বাস্তবায়নের বিষয়ে জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। আপাতত আমরা শুধুমাত্র উচ্চকক্ষে পিআরের পক্ষে।

ভারতের প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতীয় যে আধিপত্যবাদ রয়েছে, তা বিএনপি ও জামায়াত তাদের অবস্থান থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী মোকাবিলা করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে এনসিপি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। আমরা একটি স্থিতিশীল সরকার চাই, যা এনসিপির সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়।

সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সারজিস আলম বলেন, সেনাবাহিনীর কিছু অফিসারকে ব্যবহার করে শেখ হাসিনা অসংখ্য গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। আয়নাঘরের মতো অসংখ্য নির্মমতা আমরা দেখেছি। শুধু একজন অফিসার অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে—এ রকম তথ্যও আমরা ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনেছি। এসব সিরিয়াল কিলারের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আশা করি, সেনাবাহিনী এসব খুনির দায়ভার গ্রহণ করবে না।

তিনি আরও বলেন, নেগোশিয়েশনের নামে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হলে জুলাই আন্দোলনের সার্থকতা পূরণ হবে না।

সভায় এনসিপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলম, কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) প্রীতম সোহাগ, কেন্দ্রীয় সদস্য ফাহিম রহমান খান পাঠান, জুলাই ওরিয়র্স জেলা কমিটির আহ্বায়ক তোফায়েল আহমদ, খালিয়াজুরি উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমানসহ জেলা ও উপজেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলন শেষে সারজিস আলম নেত্রকোনা জেলা ও উপজেলা এনসিপির সমন্বয় কমিটির নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় সভায় অংশ নেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়