ঢাকায় ৩০০ ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত: রাজউক চেয়ারম্যান
ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি কয়েক দফা ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আওতাধীন এলাকায় প্রায় ৩০০টি ছোট-বড় ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে রাজউকের আয়োজনে ‘ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাসে প্রস্তুতি ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এই তথ্য জানান রাজউক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম।
চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ভূমিকম্প বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরবর্তী পরিস্থিতি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার জন্য সমন্বিতভাবে কাজ করা অপরিহার্য। ভবন ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে, তার মূল কারণ হলো—সিটি করপোরেশন, রাজউক এবং ফায়ার সার্ভিস—এই তিনটি সংস্থার আলাদা ও বিচ্ছিন্নভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা।
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, সবাইকে একযোগে এবং সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে হবে।
ভবন নির্মাণ অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজউক চেয়ারম্যান স্পষ্ট করে জানান যে, ভবন নির্মাণের অনুমোদন যথাযথ নিয়ম মেনেই দেওয়া হয় এবং রাজউকে অর্থের বিনিময়ে কোনো কাজ করা হয় না।
তিনি উল্লেখ করেন, রাজউক নিজে থেকে কারও জন্য ভবনের নকশা প্রণয়ন করে না। বরং বাড়িওয়ালারা নিজেরাই তাদের নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ার বা আর্কিটেক্ট দিয়ে নকশা তৈরি করে রাজউকে জমা দেন। এক্ষেত্রে শর্ত থাকে—নকশা অবশ্যই রাজউকের নিয়ম অনুযায়ী হতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘এ মাসে ২০ বার কেঁপে উঠতে পারে দেশ’
চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলামের মতে, যদি কেউ পরবর্তীতে সেই নিয়ম বা অনুমোদিত নকশা না মেনে ভবন নির্মাণ করেন, তবে জরিমানা বা শাস্তির দায়ভার সম্পূর্ণভাবে তাদের, এর দায়ভার রাজউকের নয়।
তিনি মন্তব্য করেন, নিয়মবহির্ভূত এবং নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণে রাজউক ও ভবনমালিক উভয়েরই দায় থাকলেও, মূল দায়ী হলেন ভবনমালিকেরা।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবেলায় বিচ্ছিন্ন পরিকল্পনার পরিবর্তে ৬ মাস থেকে ১ বছরের সমন্বিত পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দিকে এগোনোর ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, প্রকৃতি বারবার ছাড় দেবে না। ঝুঁকি নিরূপণে সরকারি দপ্তরগুলোর পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন ফার্মকে সার্ভের দায়িত্ব দেওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।
অন্যদিকে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান জানান, পরিকল্পিত নগর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজউকের ক্ষমতা বাড়াতে সরকার দ্রুতই পদক্ষেপ নেবে।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া স্থাপত্য ও নগর পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞরা অনিরাপদ নগর তৈরির জন্য পরোক্ষভাবে রাজউককে দোষারোপ করেন এবং তিনটি সংস্থার মধ্যে দ্রুত সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








