News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:৩২, ২১ নভেম্বর ২০২৫

ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির সর্বশেষ তথ্য জানালো ফায়ার সার্ভিস

ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির সর্বশেষ তথ্য জানালো ফায়ার সার্ভিস

ফাইল ছবি

ছুটির দিনের সকালেই ঢাকাকেন্দ্রিক শক্তিশালী ভূমিকম্পে রাজধানী ও আশপাশের জেলাজুড়ে আতঙ্ক দেখা দেয়। 

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত এই মাঝারি মাত্রার ভূকম্পনের উৎপত্তি ছিল নরসিংদীর মাধবদীতে, যা আগারগাঁও আবহাওয়া অফিস থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার পূর্বে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৭। 

ভূমিকম্পের পর বেলা ১২টা থেকে ১২টা ১০ মিনিট পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া ক্ষয়ক্ষতি, অগ্নিকাণ্ড ও ভবনঝুঁকির তথ্য হালনাগাদ করে প্রকাশ করে; পরে পুলিশের তথ্যে হতাহতের সংখ্যা আরও স্পষ্ট হয়।

রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় একটি ভবনের আলগা সানশেড ও ইট খসে পড়ে তিন পথচারীর মৃত্যু হয়। মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। 

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি দেয়াল ধসে দশ মাসের এক শিশুর মৃত্যু ঘটে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পলেস্তরা খসে পড়া, ফাটল, দেয়াল–রেলিং ভেঙে পড়া এবং আতঙ্কে ছুটোছুটি করতে গিয়ে আরও বহু মানুষ আহত হয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলছে, মোট আহতের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার কসাইটুলি এলাকা। প্রথমে ভবন ধসের খবর পাওয়া গেলেও পরিদর্শনে দেখা যায় ভবনের কাঠামোগত ক্ষতি হয়নি। পলেস্তরার আলগা অংশ ও কয়েকটি ইট খসে পড়ে পথচারীরা আহত ও নিহত হন। খিলগাঁও এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আসা ইটে একজন আহত হন এবং স্থানীয়রা তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেন।

আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে দেশের ৭ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ

ভূমিকম্পের পর বারিধারা ব্লক–এফ, রোড–৫–এর একটি বাসায় আগুন লাগে। বারিধারা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও তা ভূমিকম্পের কারণে ঘটেছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

একই সময় সূত্রাপুরের স্বামীবাগ এলাকায় আটতলা একটি ভবন পাশের আরেকটি ভবনের দিকে হেলে পড়েছে—এমন খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে যায়। পরিদর্শনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। 

কলাবাগানের আবেদখালী রোডেও সাততলা একটি ভবন হেলে পড়ার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে জানা যায় ভবনটির কাঠামো অক্ষত, আতঙ্কিত বাসিন্দাদের ফোনেই ঘটনাটি জানানো হয়েছিল। 

এছাড়া মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় একটি বাড়িতে আগুন লাগে এবং সেখানে ফায়ার সার্ভিসের দুই ইউনিট কাজ করে।

ভূমিকম্পের সময় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশন পরিদর্শনে গিয়ে কোনো ধরনের ক্ষতি পায়নি এবং গুজব বলে তা নিশ্চিত করে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা মাঝারি হলেও সেটি অগভীর হওয়ায় রাজধানীজুড়ে কম্পনটি প্রবলভাবে অনুভূত হয়েছে। বিশেষত পুরান ঢাকার পুরনো ভবনগুলোতে পলেস্তরা ও ইট খসে পড়ার ঝুঁকি বেশি হওয়ায় কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটে এবং প্রাণহানিও হয়। 

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, তারা সারাদেশে জরুরি সাড়া কার্যক্রম জোরদার করেছে এবং পরিস্থিতি সার্বিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়