সাভার ও আশুলিয়া নিয়ে গঠিত হচ্ছে ‘সাভার সিটি কর্পোরেশন’

ছবি: সংগৃহীত
সাভার পৌরসভা ও আশুলিয়া মিলিয়ে সাভার সিটি করপোরেশন গঠন এবং কেরানীগঞ্জকে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা বা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই তথ্য জানান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, গুরুত্ব বিবেচনা করে সাভার পৌরসভা ও আশুলিয়া মিলিয়ে সাভার সিটি করপোরেশন গঠনের জন্য ঢাকার জেলা প্রশাসক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের জন্য ফাইল প্রেরণ করে। প্রধান উপদেষ্টা সাভার সিটি করপোরেশন গঠনের জন্য নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। এরপর তা স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, সাভার সিটি করপোরেশন গঠনের জন্য এখন স্থানীয় সরকার বিভাগ সম্ভাব্যতা যাচাইসহ তাদের পর্যায়ের বিভিন্ন কাজ করবে। বিষয়টি এখনও একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সিটি করপোরেশন তাদের পর্যায়ের কাজ শেষ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবে। এরপর তা নিকার (প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি) সভায় অনুমোদনের জন্য উঠবে।
গত ১২ অক্টোবর, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখার উপসচিব মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ স্বাক্ষরিত একটি সরকারি চিঠিতে সাভারকে সিটি করপোরেশন করার প্রস্তাব জানানো হয়। প্রস্তাবটি ডিসেম্বর মাসে বিভাগীয় কমিশনারের গোপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে উত্থাপিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: একনেকে ১,৯৮৮ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন
প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সাভার বর্তমানে দেশের অন্যতম শিল্প, শিক্ষা ও ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে একটি বিশাল নগর এলাকায় পরিণত হয়েছে। তবে পৌরসভা সীমিত সম্পদ ও জনবল নিয়ে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার নাগরিক চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে। বিশেষ করে আশুলিয়া অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক গার্মেন্টস শিল্প, শ্রমিকবসতি ও আবাসিক এলাকা গড়ে ওঠায় ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় নাগরিক সেবা প্রদান প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
সাভারের আশুলিয়া এলাকায় যানজট, অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব এবং পরিবেশ দূষণ নিত্যদিনের সমস্যা হিসেবে দাড়িয়েছে। একইভাবে, ঢাকার জনসংখ্যার চাপ ও শহরের প্রসারের কারণে কেরানীগঞ্জ দ্রুত নগরায়নশীল এলাকা হলেও এখানে পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের মতো প্রতিষ্ঠান না থাকায় উন্নয়ন কার্যক্রম অপরিকল্পিতভাবে চলছে।
সরকার মনে করছে, পরিকল্পিত উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া গেলে কেরানীগঞ্জকে রাজধানীর পাশে একটি আধুনিক, সুশৃঙ্খল ও প্রাণবন্ত উপশহর হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
সরকারি সূত্র জানায়, সাভার সিটি করপোরেশন গঠিত হলে এটি দেশের নবম সিটি করপোরেশন হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রাথমিক যাচাই ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করার পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে পাঠাবে। পরে বিষয়টি নিকার সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে এবং অনুমোদন প্রাপ্তির পর বাস্তবায়ন অগ্রগতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অবহিত করতে হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি