দুর্নীতিবাজদের মনোনয়ন না দেওয়ার আহ্বান দুদক চেয়ারম্যানের
ছবি: সংগৃহীত
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মনোনয়ন না দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, প্রতিটি অপরাধ ও দুর্নীতির সঙ্গে রাজনীতির যোগসূত্র থাকে। শীর্ষ পর্যায়ে দুর্নীতি রেখে সামগ্রিকভাবে দেশকে ভালো করা সম্ভব নয়।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত দুদকের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স এগেইনস্ট করাপশন (র্যাক) সদস্যদের অংশগ্রহণে আয়োজিত দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চেয়ারম্যান ড. মোমেন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়ার কারণেই দুর্নীতি প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে উঠেছে। দলগুলো যদি এ বিষয়ে সতর্ক থাকে, তাহলে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে মনোনয়ন বেচাকেনা না হলে, মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা থাকলে দুর্নীতি কমে যাবে। যারা নেতৃত্বে থাকবে তাদের মধ্যে দৃশ্যমান সততা থাকতে হবে। আমরা জাতীয় নির্বাচনে সৎ লোক দেখতে চাই।
তিনি সতর্ক করে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীদের তথ্য পেলে দুদক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। একইসঙ্গে তিনি স্থানীয় পর্যায়ে সৎ ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়ার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন আইনের শাসনের উদাহরণ হবে: সিইসি
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও অন্যান্য অপরাধীর মতো বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। আদালত যদি প্রক্রিয়াগতভাবে আরও সহজ হয়, তাহলে বিচার দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব।
তিনি জানান, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ পলাতক দুর্নীতিবাজদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশসহ বিভিন্ন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে ইন্টারপোল ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা আশাবাদী, তাকে দ্রুত ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে, বলেন তিনি।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। তারপরও ব্রিটেনসহ কয়েকটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থা এ কাজে সহায়তা করছে। আশা করি, পাচার হওয়া কিছু টাকা হলেও আমরা ফেরত আনতে পারব।
ক্ষমতার প্রভাব বলয়ে দুদকের অনুসন্ধান ও মামলার গতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনুসন্ধান ও তদন্তের গতি কখনও বাড়ে, কখনও কমে—এটা সত্যি। তবে এখন আমাদের ওপর কোনো চাপ নেই।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে দুর্নীতির প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, বহু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী দুর্নীতির মাধ্যমে দেশকে প্রায় সর্বস্বান্ত করে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। এসব দুর্নীতির তদন্ত দুদক ভয়ভীতিহীনভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
কর্মশালায় দুদক মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী, মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও তথ্যপ্রযুক্তি) আব্দুল্লাহ-আল-জাহিদ, সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম, মহাপরিচালক মোতাহার হোসেন, আবু হেনা মোস্তফা জামান, র্যাক সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ এবং সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক উপস্থিত ছিলেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








