News Bangladesh

স্টাফ রিপোর্টার || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:১৮, ২২ অক্টোবর ২০২৫

ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়েছে সাবেক–বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের

ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়েছে সাবেক–বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের

ছবি: সংগৃহীত

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল ৭টার পর রাজধানীর পুরাতন হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত ট্রাইব্যুনালে তাদের আনা হয়। প্রিজনভ্যানে করে আনা কর্মকর্তারা সবাই সাধারণ পোশাকে ছিলেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৩২ জন আসামি রয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ সেনা কর্মকর্তা বর্তমানে সেনা হেফাজতে আছেন।

জানা গেছে, তিন মামলার মধ্যে দুটি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় এবং অন্যটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা হয়েছে।

গত ৮ অক্টোবর গুম সংক্রান্ত দুটি ফরমাল চার্জ আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

সেদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, গুম, গোপন বন্দিশালায় আটক, নির্যাতন ও হত্যাসহ নানা অপরাধের বিষয়ে এই প্রথম দুটি ফরমাল চার্জ দাখিল করা হয়েছে।

প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ গুমের অভিযোগে দুটি এবং জুলাই আন্দোলনে গুলি চালানোর অভিযোগে বিজিবি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একটি—মোট তিনটি ফরমাল চার্জ দাখিল করা হয়েছে।

প্রথম মামলায় (টিএফআই) গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনা ও তারিক সিদ্দিকীসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে) প্রমুখ।

দ্বিতীয় মামলায় (জেআইসি) গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনা ও তারিক সিদ্দিকীসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
তৃতীয় মামলায় জুলাই আন্দোলনে রামপুরায় বিজিবির গুলির ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট হয়েছে তাদের মধ্যে ১৫ জন বর্তমানে সেনা হেফাজতে আছেন।

তিনি জানান, ৮ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে তিনটি চার্জশিট দাখিল হয়—একটি র‍্যাবের টিএফআই, একটি ডিজিএফআই এবং একটি জুলাইয়ের রামপুরা ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এরপর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে সেনা হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের রিপোর্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে চূড়ান্ত শুনানি মঙ্গলবার

মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সংবিধান স্বীকৃত সব আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই আমরা আইন মেনে পদক্ষেপ নিয়েছি। ১৬ জন কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, এর মধ্যে ১৫ জন সাড়া দিয়েছেন।”

তিনি জানান, একজন কর্মকর্তা—মেজর জেনারেল কবির—৯ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয়েছেন। পরে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পরদিন ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারা-১ শাখা থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে ‘কারাগার’ ঘোষণা করা হয়।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়