News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:৩৩, ২০ জুলাই ২০২৫

ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ আসামির তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের নতুন সময়

ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ আসামির তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের নতুন সময়

ছবি: নিউজবাংলাদেশ

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি মামলায় ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমা ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। 

একইসঙ্গে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি পৃথক মামলার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমাও ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

এই আদেশ দেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল। প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়।

আদালতের নথিতে উল্লেখ আছে, ৪৫ জনের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বর্তমান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ আরও ২৩ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অভিযুক্ত রয়েছেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় বিভিন্ন স্থানে হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ট্রাইব্যুনাল এই মামলা দায়ের করে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই সময়কার সরকার ও তার মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা হত্যা ও গণহত্যার পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা।

আরও পড়ুন: তারেক-জুবাইদার বিচার নিরপেক্ষ ছিল না: হাইকোর্ট

আদালতের আজকের শুনানির জন্য সকাল থেকে কেরানীগঞ্জ, কাশিমপুর ও নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে আসামিদের কঠোর নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করা হয়। বিচারালয়ের সামনে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, যেখানে পোশাকধারী পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যরা তল্লাশি চালিয়ে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করেন। এই কারণে সাধারণ দর্শক এবং সাংবাদিকদের প্রবেশ সীমিত রাখা হয়। আসামিদের স্বজনরা আদালত প্রাঙ্গণে অপেক্ষা করছিলেন।

আদালতে অভিযোগ ওঠে, কারাগারে বন্দি হাসানুল হক ইনু কর্তৃক ভয়েস রেকর্ড করার ঘটনা, যা অসৎ উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে তদন্ত চলছে। এছাড়া আসামিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের বড়সংখ্যক অংশগ্রহণ ছিল। সেই সময়ের ঘটনার জের ধরে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। তারা গণহত্যার বিচারের উদ্যোগ নেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই মামলাগুলোকে দেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ বিচারিক অধ্যায় হিসেবে বিবেচনা করছে। নিরপেক্ষ ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখতে ট্রাইব্যুনাল কাজ করে যাচ্ছে।

তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ানোর মাধ্যমে আরও সুগভীর তদন্ত ও প্রমাণ সংগ্রহে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে মামলার দ্রুত এবং সুষ্ঠু বিচার সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গত ২০ জুলাই ট্রাইব্যুনালে একই আদেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের বিরুদ্ধে থাকা পৃথক সাতটি মামলায়ও ১৫ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। ওই মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আনিসুল হক, দীপু মনি, সালমান এফ রহমান ও জুনাইদ আহমেদ পলক।

২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর দায়েরকৃত দুই মামলায়ও দুই মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, যা পরে সময় বৃদ্ধি পেয়েছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়