সুদানের আশ্রয়কেন্দ্রে ড্রোন হামলায় নিহত অন্তত ৬০

ছবি: সংগৃহীত
সুদানের পশ্চিমাঞ্চলের অবরুদ্ধ শহর এল-ফাশারে একটি বাস্তুচ্যুত আশ্রয়কেন্দ্রে ভয়াবহ ড্রোন ও কামান হামলা চালিয়েছে বিদ্রোহী আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতে ও শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে চালানো এই হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি, আনাদোলু এজেন্সি ও রয়টার্স।
হামলার লক্ষ্য ছিল শহরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে স্থাপিত দার আল-আরকাম আশ্রয়কেন্দ্র। এল-ফাশার রেজিস্ট্যান্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির বিবৃতিতে জানানো হয়, আশ্রয়কেন্দ্রটিতে দুটি ড্রোন ও আটটির বেশি কামানের গোলা নিক্ষেপ করা হয়। এতে বহু নারী, শিশু ও প্রবীণসহ সাধারণ মানুষ নিহত হন। অনেকের মরদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে, অন্যরা আশ্রয়কেন্দ্রের ভেতরেই পুড়ে মারা গেছেন।
কমিটি এই হামলাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছে, যেসব সাধারণ মানুষ নিরাপত্তার আশ্রয় খুঁজছিলেন, তারা সেখানে জ্বলন্ত মৃত্যুর মুখে পড়েছেন। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে, যাতে শহরটির মানবিক বিপর্যয় আরও না বাড়ে।
সুদানের ডক্টরস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১৭ শিশু ও ২২ নারী রয়েছেন। এছাড়া ২১ জন আহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন: রাতভর সংঘর্ষে উত্তপ্ত পাকিস্তান-আফগান সীমান্ত
এল-ফাশার শহরটি দারফুর অঞ্চলের শেষ রাজ্য রাজধানী, যা এখনও সুদানি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ২০২৪ সালের মে মাস থেকে শহরটি অবরোধ করে রেখেছে আরএসএফ বাহিনী। এই অবরোধের ফলে শহরে ক্ষুধা ও রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। অবিরাম ড্রোন ও কামান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাস্তুচ্যুত আশ্রয়কেন্দ্র, মসজিদ, হাসপাতাল ও ক্লিনিক।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা সুরক্ষার জন্য তাদের বাড়ি ও আশপাশে বাঙ্কার খনন করেছেন। কর্মী গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, শহরটি সহিংসতা, ক্ষুধা ও রোগের কারণে প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন লোককে হারাচ্ছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো শহরটির ভয়াবহ অবস্থা তুলে ধরে একে ‘খোলা আকাশের নিচে মর্গ’ বা উন্মুক্ত মৃতঘর হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাবাহিনী ও আরএসএফ বাহিনীর মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০,০০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এক যৌথ গবেষণায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার বলে ধারণা করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় আড়াই কোটি মানুষ তীব্র খাদ্যসংকট ও দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত আরএসএফ কোনো মন্তব্য জানায়নি।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি