News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:২৩, ৯ আগস্ট ২০১৫
আপডেট: ০৫:৫৭, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

ভারতে পাঁচ মহিলাকে ‘ডাইনি’ সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা

ভারতে পাঁচ মহিলাকে ‘ডাইনি’ সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডে পাঁচ মহিলাকে ‘ডাইনি’ সন্দেহে পিটিয়ে এবং পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার মান্ডর থানার কজিয়া গ্রামের এ বর্বরোচিত ঘটনা ঘটে। শনিবার বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৫০ গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করে। এ ছাড়া নিহত নারীদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

রাতের বেলা এই পাঁচজনক তাদের বিছানা থেকে টেনে বাইরে এনে মারা হয়। তাদের ছেড়ে দেয়ার জন্য পরিবারের সদস্যরা অনেক কাকুতি-মিনতি করলেও হামলাকারীরা তাতে সাড়া দেয়নি। গ্রেফতারকৃতরা পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার রাতে গ্রামের যুবকরা পাঁচ নারীকে জোরপূর্বক তাদের বাড়ি থেকে বের করে আনে। এরপর তাদেরকে লাঠি এবং লোহার রড দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। যুবকদের দাবি ওই নারীরা 'কালো জাদু’ করতো।

রাঁচি পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রাজকুমার লাকরা জানান, গ্রামবাসীদের একটি গ্রুপ বৈঠক করে এই নারীদের খুন করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের সন্দেহ ছিল, ওই নারীরা ডাইনি এবং এদের জন্য গ্রামে অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।

জানা যায়, ওই গ্রামে কয়েক মাস আগে চার শিশুর মৃত্যু হয়। গ্রামবাসীদের একাংশের ধারণা ওই নারীরা ডাইনি হওয়ার কারণেই শিশুদের মৃত্যু হয়েছে। এরপর শুক্রবার গভীর রাতে পঞ্চায়েত বসিয়ে ওই নারীদের হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

নিহত এক নারীর একজন আত্মীয় জানান, গ্রামবাসীরা জোর করে ঘরের দরজা খোলে। তারা ঘটনার শিকার নারীদের এক এক করে বাইরে নিয়ে খুন করে। হত্যার পর ঘাতকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে মৃতদেহ ঘিরে রাখে।

শনিবার ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছালে তাদেরও বাধার সম্মুখীন হতে হয়। শেষ পর্যন্ত নগ্ন অবস্থায় থাকা ওই নারীদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ট্রাকে করে নিয়ে যায় পুলিশ।

এলাকায় তীব্র উত্তেজনা থাকায় পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ পার্শ্ববর্তী থানার কয়েকশ’ পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে।

ভারতের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১২ সাল পর্যন্ত পূর্ববর্তী ১২ বছরে ভারতে দু হাজার মহিলাকে ডাইনি সন্দেহে হত্যা করা হয়। এধরণের ঘটনা বন্ধ করতে ঝাড়খন্ডের মত রাজ্যে বিশেষ আইন করা হয়েছে।

রাজ্যের একজন পার্লামেন্ট সদস্য অভিযোগ করছেন, এমনকি অনেক শিক্ষিত তরুণও এধরণের ঘটনায় অংশ নিতে উন্মত্ত জনতার সঙ্গে যোগ দিচ্ছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসজে

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়