কোনও শাখা ছাড়াই চালু হবে ডিজিটাল ব্যাংক

ছবি: সংগৃহীত
শাখা বা উপশাখা ছাড়াই সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চালু হবে ডিজিটাল ব্যাংক। এর মাধ্যমে টাকা জমা, ঋণ গ্রহণ, প্রবাসী আয় সংগ্রহসহ সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা এখন হাতের ডিভাইসেই পাওয়া যাবে। শাখা বা উপশাখা ছাড়া সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পরিচালিত হওয়ায় সেবার খরচ কমবে।
দেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এখনো ঐতিহ্যবাহী ব্যাংকিং সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। ডিজিটাল ব্যাংকের কোনও ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা না থাকায় এটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছেও ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেবে। ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোক্তারা সহজে ঋণ পাবেন, যা কর্মসংস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে ভূমিকা রাখবে।
২০২৬ সালের মধ্যেই বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হতে পারে। এর আগে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদান নিয়ে দেশে-বিদেশে বিতর্কের কারণে এবার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রাথমিকভাবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লাইসেন্সের আবেদন গ্রহণের সময় নির্ধারণ করা হলেও তা বাড়িয়ে ২ নভেম্বর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশসহ এশিয়ার ১৬ দেশে ওপেনএআইয়ের ‘চ্যাটজিপিটি গো’ চালু
আবেদনকারীদের ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৩১ ধারা অনুযায়ী নীতিগত লাইসেন্স দেওয়া হবে। এ জন্য সিলগালা করা আবেদনপত্রের সঙ্গে ৫ লাখ টাকা প্রসেসিং ফি ও প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হবে। নথি সরাসরি বা ই-মেইলের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিনির্ভর পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে একটি দক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক সেবায় প্রবেশাধিকার বাড়বে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
ডিজিটাল ব্যাংক এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যার কোনও সরাসরি শাখা, এটিএম বা নগদ জমা মেশিন থাকবে না। এর সব সেবা পাওয়া যাবে ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে, যা ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকবে। গ্রাহকরা ভার্চ্যুয়াল কার্ড, কিউআর কোডের মতো প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য ব্যবহার করতে পারবেন। লেনদেনের জন্য অন্য ব্যাংকের এটিএম বা এজেন্ট সেবা ব্যবহার করা যাবে। হিসাব খোলা থেকে শুরু করে যেকোনো সেবা গ্রহণের জন্য কোথাও যেতে হবে না, যেকোনো স্থান থেকে ডিজিটাল মাধ্যমেই সবকিছু সম্পন্ন হবে।
বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, এটি বড় বা মাঝারি শিল্পে ঋণ দিতে পারবে না, তবে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানের অনুমতি থাকবে। এ ছাড়া ঋণপত্র (এলসি) খোলার সুযোগ থাকবে না। বর্তমানে বিকাশ, নগদ বা রকেটের মতো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) থাকলেও, ডিজিটাল ব্যাংক হবে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংকিং ব্যবস্থা, যা আর্থিক সেবাকে আরও সর্বজনীন ও সহজলভ্য করে তুলবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি