মারধরের অভিযোগ, কর্মবিরতিতে সোহরাওয়ার্দীর নার্সরা

ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক নার্সকে চিকিৎসকের মারধরের অভিযোগ ঘিরে টানটান উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে নার্সরা হঠাৎ কর্মবিরতিতে গেলে সকাল থেকেই স্থবির হয়ে পড়ে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম, ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে হাসপাতালের সব ধরনের সেবা বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করছেন নার্সরা।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, বুধবার বিকালের শিফটে নার্স কামরুল হাসান ও চিকিৎসক সৈকত তাওহিদের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তেজিত হয়ে যায়।
অভিযোগে বলা হয়েছে যে, সেই সময় সৈকত তাওহিদ আরও কয়েকজনকে নিয়ে কামরুল হাসানকে পিটিয়ে আহত করেন। আহত কামরুল হাসানকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে—বর্তমানে তিনি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ও চিকিৎসাধীন আছেন।
অভিযোগের বিষয়টি আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলছে অভিযুক্ত চিকিৎসক সৈকত তাওহিদের কাছের রাজনৈতিক পরিচয়—স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি। এই তথ্য নিয়ে নার্স প্রফেশনালদের মধ্যে উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি তীব্র হয়েছে।
আরও পড়ুন: মানবতার নামে ব্যবসা, অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে লাশও জিম্মি
ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নার্সরা হাসপাতালের পরিচালক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে বিক্ষোভ ও স্লোগান দেন।
সিনিয়র স্টাফ নার্স নাজমা আক্তার সংবাদদাতাদেরকে বলেন, আমাদের সহকর্মীর গায়ে হাত তোলা হয়েছে—আমরা এ অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি করছি। যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া চাই।
অন্য একজন আন্দোলনকারী নার্স (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, এ ধরনের আক্রমণ আমাদের সবার জন্য হুমকি। নার্সদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে আমরা সেবা দিতে পারব না; এমন ঘটনা আমাদের মধ্যে ভয় ও অসুরক্ষার বোধ তৈরি করছে। প্রশাসন সতর্ক না হলে রোগীদের সেবার মানও প্রভাবিত হবে।
হাসপাতালের রোগীরা ও পরিজনরা কর্মবিরতির কারণে চরম ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন—বহু নির্ধারিত পরীক্ষা ও অনানুষ্ঠানিক জরুরি সেবা ব্যাহত হচ্ছে। নার্সদের দাবি মেনে দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্ত না হলে কর্মসূচি বাড়ানো হবে বলেও তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
অভিযুক্ত চিকিৎসক সৈকত তাওহিদের পক্ষ থেকে ঘটনা সম্পর্কিত কোনো মন্তব্য সংবাদ সংগ্রহের সময় পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে হাসপাতাল পরিচালক ডা. শিহাব উদ্দিনকে ফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল ফোনে সাড়া দেননি—হেট দৃশ্যমান প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এই ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিংবা জেলা স্বাস্থ্য প্রশাসনের কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি সংবাদ সংগ্রহের সময়ে পাওয়া যায়নি; প্রশাসন থেকে যদি পরে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়, আপডেট দেওয়া হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি