ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮১৪
ফাইল ছবি
দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ৮১৪ জন রোগী।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে সোমবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৮টা পর্যন্ত সময়ের হিসাব দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মোট ২৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬১ হাজার ৬০৫ জন রোগী। এর মধ্যে ইতোমধ্যে ৫৮ হাজার ৫২১ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
২০২৪ সালে দেশে ডেঙ্গুতে মোট ৫৭৫ জনের মৃত্যু এবং এক লাখ ১ হাজার ২১৪ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর ২০২৩ সালে ছিল এ পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতি—সেই বছর আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন, মৃত্যু হয়েছিল ১ হাজার ৭০৫ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া ৮১৪ জন রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৪ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৭০ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১০৭ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪০ জন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪১ জন, সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫ জন ভর্তি হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক: নতুন আক্রান্ত ৯৪২
একই সময়ে ৮১৯ জন রোগী হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত চারজনের মধ্যে তিনজনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা এবং একজন বরিশাল বিভাগের (সিটি করপোরেশনের বাইরে) বাসিন্দা ছিলেন।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যুর মাসভিত্তিক চিত্র হলো জানুয়ারি: ১০ জন, ফেব্রুয়ারি: ৩ জন, মার্চ: কোনো মৃত্যু হয়নি, এপ্রিল: ৭ জন, মে: ৩ জন, জুন: ১৯ জন, জুলাই: ৪১ জন, আগস্ট: ৩৯ জন, সেপ্টেম্বর: ৭৬ জন, অক্টোবর (২১ অক্টোবর পর্যন্ত): ৫৫ জন।
অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২৫ সালের ২১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে মোট ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৮ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০০০ সাল থেকে ডেঙ্গু সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করে আসছে। অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৫ বছরের মধ্যে ২০২৩ সাল ছিল ডেঙ্গু মৃত্যুর দিক থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ বছর। সেই বছর রেকর্ডসংখ্যক ১,৭০৫ জনের মৃত্যু এবং ৩ লাখের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন, নগরাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, অপরিকল্পিত নির্মাণকাজ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি ডেঙ্গু বিস্তারের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও মশা নিধন কার্যক্রম চলমান বলে স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, তবে ডেঙ্গুর সংক্রমণ হার এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
সূত্র: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম (২১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখের নিয়মিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








