সিডনি-মেলবোর্নে স্থায়ী কনস্যুলেটের পরিকল্পনা
অস্ট্রেলিয়া থেকে: বিশাল ভূখণ্ডের দেশ অস্ট্রেলিয়ার সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক ক্রমবর্ধমান ব্যবসা-বাণিজ্য তথা ‘বিগ ভলিউম ট্রেড অ্যান্ড কমার্সের’ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সিডনি, মেলবোর্ন এবং অ্যাডিলেডে স্থায়ী কনস্যুলেট অফিস স্থাপনের পরিকল্পনা আছে বাংলাদেশের।
একথা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরাতে দায়িত্বরত বাংলাদেশের হাইকমিশনার কাজী ইমতিয়াজ হোসেন। পুরো অস্ট্রেলিয়া জুড়ে হাইকমিশনের কার্যক্রম ঢেলে সাজাতে ক্যানবেরাস্থ বাংলাদেশ মিশন কতটা সক্ষম, তা নিয়ে সম্প্রতি এই প্রতিবেদকের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেন তিনি।
জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক কাজী ইমতিয়াজ হোসেন জানান, “এখানকার বিভিন্ন স্টেটের সাথে পার্টনারশিপ ডেভেলপ করতে আমার যখনই সুযোগ হয় সশরীরে গিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করতে সচেষ্টন হই। আমি এ ধরনের সুযোগ তৈরিও করি। ক্যানবেরা যেহেতু মূলত প্রশাসনিক রাজধানী এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ এখানে অনেক কম, তাই আমি মনে করি সিডনি, মেলবোর্ন ও অ্যাডিলেডের মতো বড় শহরগুলোতে স্থায়ী কনস্যুলেট অফিস স্থাপনের মাধ্যমে আমাদের ফিজিক্যাল প্রেজেন্স বাড়ানো প্রয়োজন।”
আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যেই ওই স্থায়ী কনস্যুলেট অফিসগুলো স্থাপনের ব্যাপারে আশাবাদী হাইকমিশনার কাজী ইমতিয়াজ হোসেন।
প্রসঙ্গত, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই অস্ট্রেলিয়ার সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এক বিলিয়ন ইউএস ডলারের ওপরে রয়েছে এবং প্রতি বছরই তা আশাব্যঞ্জক হারে বাড়ছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশটিতে বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্য ছিল যেখানে মাত্র ১১০ মিলিয়ন ইউএস ডলার, সেখানে সদ্য শেষ হওয়া ২০১৪-১৫ অর্থবছরে লক্ষমাত্রার তুলনায় ২২ ভাগ বেশি অর্জনের মাধ্যমে তা ৬০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ছাড়িয়ে যায়। একইসময় অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশের আমদানি বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার।
ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক্সপার্টদের মতে, সিডনি, মেলবোর্ন এবং অ্যাডিলেডে স্থায়ী কনস্যুলেট অফিস স্থাপিত হলে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে নতুন দিগন্তের সূচনা হবার পাশাপাশি সমগ্র অস্ট্রেলিয়া জুড়ে বাংলাদেশি পণ্যের আরো ব্যাপক বাজার সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশ যেহেতু ২০০৩ সাল থেকেই অস্ট্রেলিয়ার বাজারে ‘ডিউটি অ্যান্ড কোটা ফ্রি’ বাণিজ্য সুবিধা পেয়ে আসছে, তাই চলমান সাফল্যের ধারাবাহিকতা রক্ষায় ঢাকা থেকেও বিষয়টিকে ‘প্রায়োরিটি’ দেওয়া হবে- এই আশাবাদ এখানকার বিভিন্ন শহরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের।
তাছাড়া এখানকার গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে বাংলাদেশি কনস্যুলেট অফিস হলে অর্থনৈতিক সংকটমুক্ত বিশাল এই দেশে অধিক সংখ্যায় ‘স্কিল্ড অ্যান্ড কোয়ালিফাইড’ বাংলাদেশিদের আগমন ঘটবে। এটা আগামী দিনগুলোতে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরো বেগবান করবে আর বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণারও প্রসার ঘটবে পশ্চিমা বহির্বিশ্বে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/একে
নিউজবাংলাদেশ.কম








