News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৯:০৪, ১৯ মে ২০২৫
আপডেট: ১৯:০৯, ১৯ মে ২০২৫

চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যা চেষ্টা, বেঁচে আছেন সেই যুবক

চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যা চেষ্টা, বেঁচে আছেন সেই যুবক

ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার নশরৎপুর রেলস্টেশনে চলন্ত ট্রেন থেকে এক যুবককে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিদেশ পাঠানোর টাকা নেওয়ার পর সময়মতো কাগজ না দেওয়ায় এক যুবককে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

রবিবার (১৮ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়া থেকে সান্তাহারগামী একটি কমিউটার ট্রেনে ঘটনাটি ঘটে। এতে গুরুতর আহত হন মতিউর রহমান (৪০) নামে এক ব্যক্তি। বর্তমানে তিনি বগুড়ার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়।

৩৫ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, চলন্ত ট্রেনের দরজায় ঝুলছেন এক ব্যক্তি, ভেতর থেকে কেউ তার হাত ধরে রাখলেও একপর্যায়ে হাত ছেড়ে দিলে তিনি নিচে পড়ে যান। ঘটনাটি নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা ও সমালোচনা।

আহত মতিউর রহমান নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আগে অটোরিকশা চালালেও গত দুই বছর ধরে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর কাজ করছেন। সম্প্রতি তিনি বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার তালশান গ্রামের মোহাম্মদ হেলালের ছেলে সজীব হোসেনকে সাড়ে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে সৌদি আরবে পাঠান। কিন্তু সৌদি পৌঁছে ইকামা (কাজের অনুমতিপত্র) পেতে দেরি হওয়ায় সজীবের পরিবার মতিউরের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। 

আরও পড়ুন: যশোরে ককটেল বিস্ফোরণে শিশুর মৃত্যু, আহত ২

মতিউরের ছেলে আহসান হাবিব অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন তার বাবা দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনে করে সান্তাহারে আসছিলেন। ট্রেন নশরৎপুর স্টেশনের কাছাকাছি এলে সজীবের ছোট ভাই রাকিব ও শ্যালকেরা তাকে মোবাইল চোর বলে দাবি করে মারধর শুরু করে। পরে চলন্ত ট্রেনের দরজায় ঝুলিয়ে প্রায় ৪-৫ মিনিট ধরে রেখে শেষে নিচে ফেলে দেয়। ওই সময় তার কাছে থাকা ৫০ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ট্রেন থেকে পড়ে গেলে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মতিউর গুরুতর আহত হন। ভাগ্যক্রমে ট্রেনের চাকা তার শরীরের ওপর দিয়ে যায়নি, তবে একটি পা ভেঙে যায়। ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়ার পর স্থানীয় কয়েকজন তাকে চোর সন্দেহে মারধরও করেন।

আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে আদমদিঘী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়, পরে স্থানান্তর করা হয় বগুড়ার একটি ক্লিনিকে। 

অভিযোগ জানাতে গেলে আদমদিঘী থানা পুলিশ বিষয়টি রেলওয়ের মামলা বলে জানিয়ে অভিযোগ নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে সান্তাহার রেলওয়ে থানা গেলে সেখানেও মামলা নিতে গড়িমসি করা হয়।

মতিউরের পরিবারের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং এখন বিভিন্ন মহল তাকে চোর ও প্রতারক হিসেবে প্রচার করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সজীবের পিতা মোহাম্মদ হেলাল বলেন, তার ছেলে সজীবকে এক মাস দশ দিন আগে মতিউরের মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাজ না পাওয়ায় তারা মতিউরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছিলেন। তবে মতিউর ট্রেনে ফেলে দেওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য তিনি জানেন না, তবে তার ছেলের শ্যালকেরা এতে জড়িত থাকতে পারে বলে স্বীকার করেন।

আদমদিঘী থানার ওসি এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি রেলওয়ে এলাকার হওয়ায় তারা কোনো অভিযোগ গ্রহণ করেননি। সান্তাহার জিআরপি থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার প্রথমে তাদের থানায় এলে পরে আদমদিঘী থানা থেকে ফোন পেয়ে সেখানেই ফিরে যায়। এ নিয়ে তদন্ত চলছে।

এ ঘটনায় মতিউরের পরিবার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করেছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি/এনডি 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়