ফার্মগেটে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর ফার্মগেটে ট্রাকচাপায় মাদরাসার এক শিক্ষার্থী সিফাত নিহতের ঘটনায় বিচার দাবি এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছেন। পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেওয়ায় প্রশাসনের লোকদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা ফার্মগেট মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশের সড়কগুলোতেও প্রভাব পড়ে এবং দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলছি।
সিফাত হত্যার ঘটনার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ফার্মগেট এলাকার একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী সিফাতকে ট্রাকচাপায় হত্যা করা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে এবং আসামিদের গ্রেফতারে কাজ চলছে।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি
আরও পড়ুন: জেনেভা ক্যাম্পে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত ১
১. সিফাত হত্যার বিচার: ট্রাকচাপায় সিফাত নিহতের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
২. ফুটপাত দখলমুক্তকরণ: ফুটপাত থেকে সব অবৈধ দোকান, অস্থায়ী স্থাপনা, অননুমোদিত বাজার ও ভবঘুরে স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করতে হবে।
৩. পার্কিং আইন কার্যকর: নো পার্কিং জোন কঠোরভাবে ঘোষণা ও কার্যকর করতে হবে।
৪. যানবাহন নিয়ন্ত্রণ: দুর্ঘটনা এবং যানজট এড়াতে রেল-ক্রসিং থেকে গির্জা পর্যন্ত রোডে অটোরিকশা, ট্রাকসহ ভারী যানবাহন প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।
৫. সড়ক নিরাপত্তা অবকাঠামো: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সন্নিকটে তিনটি স্পিডব্রেকার, সড়কে পর্যাপ্ত ল্যাম্পপোস্ট, লেন ডিভাইডার এবং ট্রাফিক আইল্যান্ড স্থাপন করতে হবে।
সিফাত নামের মাদরাসা ছাত্রটি গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ফার্মগেট এলাকায় লরিচাপায় নিহত হন। ঘটনার পরই শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে। বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত সরকারি বিজ্ঞান কলেজের সামনের সড়কও তারা অবরোধ করেছিলেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বুধবার প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তারা তাদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদ ও ক্ষমা দাবিতে বৃহস্পতিবার ফার্মগেট মোড়ে সড়ক অবরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
সড়ক অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষও বিপাকে পড়েছেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী সাজ্জাদ বলেন, মতিঝিলে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজে যাওয়ার জন্য বের হয়েছি। রাস্তায় এমন জ্যাম যে বাস থেকে নামতে বাধ্য হয়েছি। পরে বিকল্প উপায়ে যেতে হবে।
অন্য একজন পথচারী রাকিব বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। তবে পুরো রাস্তা বন্ধ করলে সাধারণ মানুষ কষ্ট পায়। প্রশাসন যদি আগে ব্যবস্থা নিত, এমন পরিস্থিতি হতো না।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








