নারায়ণগঞ্জের সাত খুন
‘রানা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত’
খুলনা: আলোচিত নারায়ণগঞ্জের ৭ হত্যাকাণ্ডের সাথে ‘লে. কমান্ডার(অবসরপ্রাপ্ত) এমএম রানা জড়িত নন। তিনি র্যাবের একটি গ্রেফতার অভিযানে সহায়তা করেন মাত্র। কিন্তু তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে দেওয়ার পাশাপাশি চাকরির সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। ন্যায়বিচার থেকেও তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। রানার ছোট ভাইয়ের পড়াশুনা বন্ধের পথে।’ এ অবস্থায় রানার পরিবার সুবিচার চায়। এজন্য বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লে. কমান্ডার (অবসরপ্রাপ্ত) এমএম রানার স্ত্রী নুর-এ-হাফজা এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি দীর্ঘ এক বছর তদন্তের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা কোনোরূপ সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়া এমএম রানার বিরুদ্ধে কথিত অপহরণের সহযোগিতার অভিযোগে আসামি করেন। অথচ একথা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, সুশৃঙ্খল এলিট ফোর্স র্যাবের চেইন অব কমান্ড এবং অফিসিয়াল অর্ডারের প্রায়োজন থাকে। তাছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতেও এমএম রানা কোনোরূপ নিজেকে জড়িয়ে ‘অপহরণ’ ও হত্যার সহায়তার দোষ স্বীকার করেননি। এমনকি কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল তারেক সাঈদ ও অপারেশন অফিসার মেজর আরিফ তাদের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতেও এমএম রানাকে জড়িয়ে কোনো বক্তব্য দেননি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কাউন্সিলর নজরুল ইসলামকে গ্রেফতারের বিষয়টি ছিল র্যাবের একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। যেটি সম্পন্ন হয়েছে সিও তারেক সাঈদের নির্দেশে এবং মেজর আরিফের নেতৃত্বে। গ্রেফতারের পর লে. কমান্ডার এমএম রানার কাছে আসামি রাখাও হয়নি। ওই অভিযানের পূর্ব ও পরবর্তী মোবাইল রেকর্ডিংও তার জ্বলন্ত সাক্ষী। কিন্তু রানাকে এ মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে তার অভিযোগ।
সংবাদ সম্মেলনে রানার স্ত্রী আরও অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামী বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একজন দক্ষ অফিসার। কিন্তু তাকে কোনো প্রকার আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বেআইনিভাবে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। যা বাংলাদেশের সংবিধানে প্রদত্ত অধিকার ও নৌবাহিনী আইনের পরিপন্থী বলেও তিনি দাবি করেন। সকল প্রকার ন্যায় বিচার বঞ্চিত হয়েছেন এবং উচ্চ আদালতেও তার জামিনের শুনানিতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়। যা ফৌজদারি কার্যবিধি ও সংবিধান পরিপন্থী বলেও তিনি দাবি করেন।
তিনি বলেন, পিতার মৃত্যুর পর রানাই তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার আয়ের ওপরই বিধবা মায়ের ভরণপোষণ আর ভাইয়ের লেখাপড়া চলত। কিন্তু তার এ করুণ পরিণতির পর চাকরির সকল সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে। এমনকি বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হলেও এলপিআরের টাকাও দেয়া হয়নি। যে কারণে রানার পরিবারের সদস্যরা একটি অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হতে হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে রানার পরিবার যাতে ন্যায়বিচার পায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহায়তা কামনা করা হয়। এ সময় রানার বৃদ্ধ মাতা কোহিনুর বেগম, সাড়ে তিন বছরের একমাত্র কন্যা মারিহা আলভিনা, শ্বশুর এসএম জামাল উদ্দিন এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফরহাদ আব্বাস উপস্থিত ছিলেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেজেএইচ
নিউজবাংলাদেশ.কম








