দিল্লি না ঢাকা, ছিটমহলবাসী নয়, বঙ্গবাসী
কুড়িগ্রাম: দিল্লি নয় ঢাকা; ছিটমহলবাসী নয় বঙ্গবাসী। শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিটে দাশিয়ারছড়ার প্রতিটি পাড়া মহল্লা এ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে।
এদিকে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’ জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে কালিরহাটসহ ১০টি পয়েন্টে জ্বালানো হয় ৬৮টি করে মোমবাতি।
ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের উদ্যোগে দাশিয়ারছড়ার কালিরহাট বাজারের কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মো. জাফর আলী। সংগঠনের সভাপতি মইনুল হক ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা এবং দাশিয়ারছড়া ছিটের সভাপতি আলতাফ হোসেনসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের নেতা অধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান বাবু, সাঈদ হাসান লোবান, সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. নুরুন্নবী খন্দকার,জেলা তথ্য অফিসার মোজাম্মেল হক এবং ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী সরকারসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তির আনন্দে বৃষ্টি উপেক্ষা করে গভীর রাত পর্যন্ত ছিটমহলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত মানুষ ছুটে আসেন কালিহাট বাজারে। কুড়িগ্রামের জেলার বিভিন্ন উপজেলা শুধু নয়, পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে অনেক মানুষ ছিটমহলে আসেন এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটির সাক্ষী এছাড়া আনুষ্ঠানিকভাবে রাশমেলা, কামালপুর, আমবুড়ার থোপ, হাবীটারী,দেবিরপাঠ, খরিয়াটারী, বালাটারী ও দোলাটারী, এলাকায় ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির ওয়ার্ড কমিটির উদ্যোগে এবং কালিহাট বাজার সংলগ্ন মসজিদ প্রাঙ্গণে আওয়ামীলীগের উদ্যোগে পৃথক পৃথক ভাবে ৬৮টি করে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। সবখানেই ছিল স্বতঃস্ফুর্ত মানুষের সমাগম। গোটা দাশিয়ারছড়া ছিটমহলে ছিল স্বাধীনতার উৎসব। সারারাত জেগেছিল দাশিয়ারছড়ার মানুষ।
একইভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১টি ছিটমহল আগস্টের প্রথম প্রহরে মোমবাতি জ্বালিয়ে বাংলাদেশের সাথে একীভুত হয়। সবচেয়ে বড় ছিটমহল দাশিয়ারছড়ায় ছিল সাজসাজ রব।
ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি বাংলাদেশ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা জানান, দীর্ঘ ৬৮ বছরের বঞ্চনা ও অধিকারহীনতার অবসান হয়ে নাগরিক পরিচয় পেয়ে ছিটমহলের প্রতিটি মানুষ আজ আনন্দে উদ্বেলিত।
সমন্বয় কমিটি সূত্র জানায়, এই ছিটমহলের ১ হাজার ৮০০ পরিবারে একযোগে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।
শনিবার ভোর ৬টায় ছিটমহলে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি। বিজয় মঞ্চে বাংলাদেশ ও ভারতের ছিটমহল আন্দোলনের নেতারা ছাড়াও স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা যোগ দেয়।
এছাড়া শনিবার দিনব্যাপী রয়েছে নৌকা বাইচ, লাঠিখেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের খেলাধুলাসহ দিনভর নানা অনুষ্ঠান। আনন্দে মুখরিত থাকবে মুক্ত ভুখণ্ড দাশিয়ারছড়া।
নিউজবাংলাদেশ.কম/কেজেএইচ
নিউজবাংলাদেশ.কম








