শাটডাউন-অস্থিরতায় স্থগিত রাকসু নির্বাচন

ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করে আগামী ১৬ অক্টোবর আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক অস্থিরতা, শিক্ষকদের ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি এবং দুর্গাপূজার ছুটিতে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর ক্যাম্পাস ছাড়ার কারণে বর্তমান পরিবেশে সুষ্ঠু, উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। এসব বিষয় বিবেচনায় এনে ২৫ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ১৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) নির্বাচন অনুষ্ঠানের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
এর আগে রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে চারটি প্যানেল ও অন্তত ২০ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাদের অভিযোগ, প্রায় ৬০ শতাংশ ভোটার ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে গেছেন, ফলে ভোটের পরিবেশ অনুকূলে নেই। ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলসহ অন্তত পাঁচটি প্যানেল নির্বাচন পেছানোর দাবি জানায়।
তারা বলেছে, দুর্গাপূজা শেষে ভোট হলে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়বে।
তবে ইসলামী ছাত্রশিবির নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা
সংগঠনটির সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, কমিশন আস্থার জায়গা হারিয়েছে। বারবার নির্বাচন পেছানো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক ধরনের অপরাজনীতি। আমরা চাই ২৫ সেপ্টেম্বরই নির্বাচন হোক।
শিবিরের প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজাও দাবি করেন, পূজার আগে ভোট হলে অংশগ্রহণ বেশি হতো।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পোষ্য কোটা পুনর্বহাল ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন। সকাল থেকে বুদ্ধিজীবী চত্বর ও প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তারা মানববন্ধন করেন। অধিকাংশ বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে, প্রশাসনিক ভবনগুলোতেও তালা ঝুলছে।
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল আলীম সোমবার রাতে ঘোষণা দেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শাটডাউন চলবে। কর্মকর্তা সমিতিও সংবাদ সম্মেলন করে একই দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ. নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাকসু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ছাত্রশিবির মানছে না, কিন্তু ক্যাম্পাসের এই অবস্থায় কোনোভাবেই নির্বাচন আয়োজন করা যাবে না।
পোষ্য কোটা পুনর্বহালকে ঘিরে সৃষ্ট অস্থিরতা এবং পূজার ছুটিতে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতিই মূলত নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করেছে।
এখন প্রশ্ন হলো, নির্ধারিত নতুন তারিখে পরিবেশ স্বাভাবিক হয়ে সুষ্ঠুভাবে ভোট আয়োজন করা সম্ভব হবে কি না।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি