News Bangladesh

স্পোর্টস ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৯:২০, ৮ অক্টোবর ২০২৫
আপডেট: ১৯:২১, ৮ অক্টোবর ২০২৫

তামিমের নেতৃত্বে ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে সরে গেল ৪৮ ক্লাব

তামিমের নেতৃত্বে ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে সরে গেল ৪৮ ক্লাব

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে অবৈধ ও একতরফা আখ্যা দিয়ে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট লিগ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক জাতীয় অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও ঢাকার ৪৮টি ক্লাবের সংগঠক। 

বুধবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ক্লাব অর্গানাইজার অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবাল বলেন, আমার বক্তব্য পরিষ্কার, আমি মনে করি না এটি কোনো নির্বাচন ছিল। ই-ভোটিংয়ের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। নির্বাচনে মোট ৪২-৪৩টি ভোটের মধ্যে ৩৪টি ই-ভোট ছিল। কিন্তু যারা ই-ভোট দিয়েছেন, তারা প্রত্যেকে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন। এমনকি নির্বাচিত ১২ জন পরিচালকও ই-ভোট দিয়েছেন, যা পুরো প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

তিনি আরও জানান, তিনি বিদেশে থাকায় ই-ভোটের জন্য আবেদন করেছিলেন। যদিও গণমাধ্যমে তার ভোট দেওয়া হয়েছে বলে খবর আসে, পরে নির্বাচন কমিশন জানায় তার ভোট গ্রহণ করা হয়নি। 

তামিম আরও জানান, আমি যদি ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচন করতাম, আমার জয় নিয়ে কোনো সন্দেহ হতো না। কারণ আমরা সবাই ক্রিকেটের স্বার্থে রয়েছি। মূল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল একটি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া।

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কাউন্সিলর মাসুদুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা এই নির্বাচনকে মানি না। আমাদের মতে, নবনির্বাচিত সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল অবৈধ। যেহেতু ক্রিকেটের সৌন্দর্য হারিয়ে গেছে, তাই প্রিমিয়ার ডিভিশন থেকে শুরু করে দেশের সব স্তরের লিগে আমরা আর অংশ নেব না। এই বর্জন জেলা পর্যায়েও পালিত হবে।

মাসুদুজ্জামান আরও বলেন, আমাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হয়েছে। ৬ অক্টোবরের নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের অস্তিত্বকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা বহু বিতর্কিত নির্বাচন দেখেছি, কিন্তু এবারের মতো প্রকাশ্য প্রহসন আগে কখনও দেখিনি। আমরা সুষ্ঠু ভোট চেয়েছিলাম, কিন্তু আমাদের কথা শোনা হয়নি।

আরও পড়ুন: বিসিবি নতুন বোর্ডের যাত্রা শুরু, কমিটি চূড়ান্ত

সংবাদ সম্মেলনের আগে, গত শনিবার, ক্লাব সংগঠকরা বিসিবি নির্বাচন পেছানোসহ তিনটি দাবি জানিয়েছিলেন। একই দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একটি স্মারকলিপিও পাঠানো হয়। 

সংগঠকদের দাবিগুলো ছিল:
১. বিসিবির বর্তমান নির্বাহী পর্ষদের মেয়াদ বাড়িয়ে নির্বাচন পুনঃতফসিল ঘোষণা।
২. বিকল্প হিসেবে অ্যাডহক কমিটির হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর।
৩. পরবর্তী সময়ে নতুন নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ভোট আয়োজন।

তাদের এই দাবি উপেক্ষা করে ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় বিসিবি নির্বাচন, যেখানে সভাপতি নির্বাচিত হন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তামিম ইকবাল, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কর্মকর্তা মাসুদুজ্জামান এবং ক্রীড়া সংগঠক আবদুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদওয়ান। তামিম ইকবাল ই-ভোটিং এবং ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। 

তিনি বলেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে সবাই থাকলে ই-ভোটিংয়ের প্রয়োজন কী? এতে স্বচ্ছতার ঘাটতি থেকেই যায়।

তিনি আরও জানান, তিনি নির্বাচনে দাঁড়ালেও ঘরোয়া ক্রিকেটের মূল অংশীদার হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার জন্য কাউকে বাস ধরাতে বা বোঝাতে হতো না। তার একমাত্র ইচ্ছা ছিল একটি সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন।

সংগঠকদের এই বর্জনের ফলে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট কার্যক্রম এক বড় সংকটের মুখে পড়েছে। প্রিমিয়ার ডিভিশন থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের লিগ স্থগিত হওয়ার ফলে খেলোয়াড়রা আর্থিক ও কর্মসংস্থানগত ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। বিসিবির নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল সংবাদ সম্মেলনের পর আলোচনা মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানালেও তামিমপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

সংবাদ সংস্থার বিশেষ বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মূল চালিকাশক্তি প্রতিযোগী ক্লাবগুলো। এগুলো বর্জনের কারণে জাতীয় লিগ ও বিভিন্ন বিভাগীয় টুর্নামেন্ট প্রভাবিত হবে, যা বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগজনক সংকেত।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়