ডাচদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের হাতছানি টাইগারদের

ছবি: সংগৃহীত
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেছে বড় কোনো সাফল্য ছাড়া। ২০০৮ সালের বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ের পর থেকে ২০২২ আসর পর্যন্ত মূল পর্বে কোনো জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। মাঝে কেবল কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড কিংবা সহযোগী সদস্য আফগানিস্তানের বিপক্ষে কিছু সাফল্য মিলেছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এসেছে নিয়মিত উন্নতি।
২০২১ সালে প্রথমবার টানা তিনটি সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা—জিম্বাবুয়ে সফরে জয়ের পর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে। যদিও সেই আনন্দ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, বিশ্বকাপে ব্যর্থতায় মিলিয়ে যায় সেই সুখস্মৃতি। এরপর ২০২২-২৩ মৌসুমে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে আবার টানা তিন সিরিজ জিতেছিল লাল-সবুজরা। এবার লক্ষ্য টানা তৃতীয়বারের মতো সিরিজ জয়ের রেকর্ড গড়া, তবে এবার ভেন্যু শুধু ঘরের মাঠেই সীমাবদ্ধ নয়।
শ্রীলঙ্কায় পিছিয়ে থেকেও সিরিজ জেতার পর ঘরে পাকিস্তানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এবার সিলেটে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করার হাতছানি লিটন দাসদের সামনে। প্রথম ম্যাচেই জয় তুলে নেওয়ায় দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত হবে। মূল ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতিতে তরুণদের নিয়ে গড়া ডাচ দল প্রথম ম্যাচেই লড়াইয়ে টিকতে পারেনি।
সোমবার (০১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল। এশিয়া কাপে যাওয়ার আগে এই সিরিজ দিয়েই প্রস্তুতিতে পূর্ণতা আনতে চায় টাইগাররা।
দ্বিতীয় ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জায়গা নেই।
আরও পড়ুন: সিলেটে সাংবাদিকের ভূমিকায় ডাচ ক্রিকেটার
তিনি বলেন, জেতার জন্য যে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার, আমরা সেটাই নেওয়ার চেষ্টা করব। হেরে গেলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই, জিতলেও উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার কিছু নেই। পরের ম্যাচে কিভাবে আরও ভালো খেলা যায় সেটাই বড়।
আগের একাদশই রাখার সম্ভাবনা বেশি। সাইফ হাসানের দুর্দান্ত ফেরা, অধিনায়ক লিটন দাসের রানে ফেরা এবং বোলিং-ফিল্ডিংয়ে সাফল্য দেখে উইনিং কম্বিনেশন ভাঙতে চাইবে না টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে ওয়ার্কলোডের কারণে তাসকিন আহমেদকে বিশ্রাম দিয়ে তার জায়গায় নাসুম আহমেদ আসতে পারেন।
সম্ভাব্য একাদশে থাকছেন তানজিদ তামিম, পারভেজ ইমন, লিটন দাস (অধিনায়ক), সাইফ হাসান, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী, শেখ মেহেদী, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ/নাসুম আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম।
প্রথম ম্যাচে জয়ের পরও আত্মতুষ্ট হতে চান না কোচিং স্টাফ। সালাউদ্দিন মনে করেন, উন্নতির প্রক্রিয়া প্রতিদিনের, থেমে থাকার নয়।
তিনি বলেন, এবার ক্রিকেটাররা ব্যাটিং, ফিটনেস, ফিল্ডিং—সব বিভাগেই ঝালাই করার সুযোগ পেয়েছে। মূল দলের বাইরের ক্রিকেটাররাও ক্যাম্পে ছিল, যাতে হঠাৎ কোনো ইনজুরি হলে বিকল্প পাওয়া সহজ হয়। আগামী প্রজন্ম যদি সিনিয়রদের চেয়েও ভালো হয়, তখনই বাংলাদেশ ক্রিকেট এগোবে।
টানা দুটি সিরিজ জয়ের পরও টিম ম্যানেজমেন্ট বেশ কিছু জায়গায় দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছিল। এবার লম্বা ক্যাম্পে সেসব কাটিয়ে উঠতে কাজ করা হয়েছে। পাকিস্তান সিরিজে ব্যর্থ লিটন দাস নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে করেছেন অপরাজিত হাফসেঞ্চুরি। দীর্ঘদিন পর সুযোগ পাওয়া সাইফ হাসানও ব্যাট হাতে দারুণ খেলেছেন। বোলিং বিভাগেও দেখা যাচ্ছে উন্নতি।
সালাউদ্দিনের মতে, বড় ক্রিকেটার হওয়ার জন্য যেসব গুণ দরকার, এই দলের অনেক ক্রিকেটারের মধ্যেই তার ছাপ রয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি