ডিপিএলে ফিক্সিং বিতর্ক, যা জানাল বিসিবি
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) এ সন্দেহজনক নিয়ে ফের একবার বিতর্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল বুধবারের গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের মধ্যকার ম্যাচে একটি স্ট্যাম্পিং নিয়ে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার পর এবার এটি নিয়ে মুখ খুলেছে বিসিবি।
শাইনপুকুর ব্যাটার মিনহাজ আবেদীনের আউট হওয়ার ধরণ দেখে প্রাথমিকভাবে বিসিবিতে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ দিয়েছে সিসিডিএম। সে বিষয়ে বিসিবির অ্যান্টি করাপশন কমিটি (অ্যাকু) কাজ করছেও বলে জানিয়েছে তারা।
বুধবার মিরপুর শের-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দশম রাউন্ডের ম্যাচে মুখোমুখি হয় গুলশান ও শাইনপুকুর।
গুলশান আগে ব্যাট করে ৪১ ওভারে ১৭৮ রান তোলে এবং অলআউট হয়। লক্ষ্য তাড়ায় শাইনপুকুর প্রায় জয়ী হতে যাচ্ছিল। তাদের শেষ উইকেটে ৭ রান প্রয়োজন ছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে অদ্ভুতভাবে আউট হয়ে আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন শাইনপুকুরের টেলএন্ডার মিনহাজুল আবেদিন সাব্বির।
এই ম্যাচের ৪৪তম ওভারের প্রথম বলটি ছিল স্পিন-অলরাউন্ডার নাঈম ইসলামের। তিনি ওয়াইড লাইনের বাইরে বল করেন এবং আম্পায়ার ওয়াইডের সংকেত দেন। কিন্তু স্ট্রাইকে থাকা ব্যাটার সাব্বির এগিয়ে এসে বলটি খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন। আউট হতে না চাইলে সাব্বির পপিং ক্রিজে ব্যাট ঢুকিয়ে রাখেন, কিন্তু পরে তা বাইরে বের করে দেন। উইকেটকিপার প্রথমে ভারসাম্য হারিয়ে স্টাম্প ভাঙতে পারেননি, কিন্তু পরবর্তী সুযোগে সাব্বিরের ব্যাট বাইরে দেখে তিনি তাকে আউট করেন।
আরও পড়ুন: শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ বাছাই মিশন
এ ঘটনায় এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ইমরুল কায়েস, শামসুর রহমান শুভ, শাহরিয়ার নাফীসরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিতর্কিত এই আউট নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার ইমরুল কায়েস।
তার দাবি, একটি দলকে সুপার সিক্সে উঠতে না দেয়ার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নেই এমন এক কাণ্ড ঘটিয়েছে গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব।
সাবেক অধিনায়ক শাহরিয়ার নাফিজ ভিডিও শেয়ার করে বিষয়টিকে লজ্জার বলেছেন।
এদিকে সাব্বির রহমান ক্রিকেটকে ধ্বংসের পায়তারা চলছে বলেও ফেসবুকে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
সাব্বির তার ফেসবুকে লিখেছেন, খুবই লজ্জাজনক! আমি নিজেই একজন খেলোয়াড়, চোখের সামনে যা দেখছি, তা মেনে নেওয়া কষ্টকর, লজ্জাজনক।
ডিপিএলে এমন কাণ্ডে হতবাক সাব্বির আরও বলেন, যে টুর্নামেন্ট আমাদের দেশের অন্যতম বড় একটি আসর হিসেবে বিবেচিত, সেখানে যদি এভাবে অনিয়ম আর ষড়যন্ত্র চলতে থাকে, তাহলে আগামী দিনের ক্রিকেট কোথায় যাবে? তরুণরা এখান থেকেই শেখে, এখান থেকেই অনুপ্রাণিত হয় — কিন্তু যখন সঠিক দিকনির্দেশনা আর জবাবদিহিতা থাকে না, তখন খেলাটাই ধ্বংস হয়ে যায়।
দেশের ক্রিকেট সামনে নয় বরং পিছনের দিকে যাচ্ছে জানিয়ে সাব্বির বলেন, সবাই জানে কী হচ্ছে — খেলোয়াড়, ম্যানেজমেন্ট — কিন্তু কেউ কিছু বলে না। এই নীরবতা আর অবিচার মেনে নেওয়া যায় না। ক্রিকেট আমাদের দেশের অহংকার। এটাকে ধ্বংস হতে দেওয়া যাবে না, নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশ ক্রিকেট সামনে নয়, বরং পিছনের দিকেই যাচ্ছে… এটাই বাস্তবতা… আর এই বাস্তবতা খুব কষ্টের।
এদিকে আউটি বিতর্ক নিয়ে বিসিবির এক পরিচালক বলেন, এটা দেখে একটু মনে হয়েছে যে ভেরি ভেরি আনইউজুয়াল, সামথিং রং হতে পারে। আমি তো আসলে প্রমাণ ছাড়া বলতে পারবো না। তবে আমাদের যে দায়িত্বটা ছিল আমরা কথা বলে সিসিডিএম সাথে পরে এন্টি করাপশান ইউনিটকে (অ্যাকু) জানিয়েছিলাম। তারা এটা ইনভেসটিগেশন করবে। তারপরে রিপোর্ট দিবে আমাদেরকে। বাকি কাজ সবকিছু তারা করবে এখন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








