জামায়াতের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি বিএনপি উপদেষ্টার

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার দায়ে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। 

তিনি বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধিতা করেছে, তাদের রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।

শনিবার (০১ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন আলাল। 

তিনি বলেন, একাত্তরের হত্যাযজ্ঞের দায়ে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য জরুরি। 

আলাল বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি তোলা উচিত—যেমনভাবে ২৩, ২৪ ও এর পূর্বের গণহত্যা, নির্মম নির্যাতন, নিপীড়ন ও ভোটাধিকার হরণের জন্য আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, একইভাবে একাত্তরের গণহত্যা ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কারণে জামায়াতের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করা দরকার। একই অপরাধে দুই ধরনের বিচার হতে পারে না বলে যোগ করেন তিনি।

আলাল আরও অভিযোগ করেন, তৎকালীন সরকার জামায়াতকে বিভিন্ন সুবিধা দিয়েছিল। 

তিনি বলেন, জামায়াতের অনেক শীর্ষ নেতা একসময় জাসদের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং গলাকাটা পার্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। ৫ আগস্টের পর থেকে শিবিরের অনেক সদস্য ছাত্রলীগের ভেতর থেকে বের হয়ে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করছে।

আরও পড়ুন: একটি গোষ্ঠী ইসলামকে ব্যবহার করে রাজনীতি করতে চায়: সালাহউদ্দিন

তিনি জানান, জামায়াত এখন রূপ বদলাতে শুরু করেছে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়কে নিয়ে সমাবেশ আয়োজন করছে, যা বিএনপির ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। 

আলাল বলেন, বিএনপি এখন এমন এক অর্জুন গাছের ছালের মতো; যার যখন প্রয়োজন, কেটে নেয়।

দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশ বহুরূপীদের খপ্পরে পড়েছে। এই অবস্থায় বিএনপির করণীয় হলো ধৈর্য ধরে সময়ের অপেক্ষা করা।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এই আলোচনায় জামায়াতের বর্তমান রাজনৈতিক কৌশল এবং অতীতের শাসকদলের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন। 

তিনি বলেন, জামায়াত এখন নতুন মুখোশে হাজির হচ্ছে, আর বিএনপিকে ব্যবহার করা হচ্ছে অর্জুন গাছের ছালের মতো। অতীতে তারা বিভিন্ন সময় শাসকদলের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছে, শিবিরের কিছু সদস্য ছাত্রলীগ থেকে বের হয়ে নিজেদের পুরোনো পরিচয় প্রকাশ করছে।

উল্লেখ্য, আলালের এই আহ্বান মূলত মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজনীতির পুনরুত্থান রোধ ও জামায়াতের রাজনৈতিক কার্যক্রম সীমিত করার প্রেক্ষাপটে এসেছে। তিনি স্পষ্ট করেন, দেশের জনগণ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আর প্রতারণা দেখতে চায় না।