“সংবিধান নয়, জনগণই ফ্যাসিবাদ ঠেকানোর মূল শক্তি”
ছবি: সংগৃহীত
সংবিধান বা লিখিত বিধিবিধান দিয়ে কখনোই ফ্যাসিবাদ ঠেকানো যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি দাবি করেছেন, ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হলো জনগণকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা।
তার মতে, জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে যদি কোনো বাধা সৃষ্টি হয়, তাহলে গণতন্ত্র সংকটে পড়বে এবং রাষ্ট্র ও দেশ সমস্যায় পড়বে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদ ঠেকাতে জনগণকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, নানা রকম শর্ত বা উপায় আরোপ করে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে যদি বাধা সৃষ্টি হয়, তাহলে গণতন্ত্রের উত্তরণের পথ সংকটে পড়বে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সংকটে পড়ে, তাহলে সবাইকে—সমগ্র রাষ্ট্র ও দেশকে সমস্যায় পড়তে হবে।
সভায় তারেক রহমান প্রচলিত ধারার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন ঘটানোর তাগিদ দেন।
তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে, কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের প্রচলিত ধারার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা কিংবা কথা বলার রাজনীতির পরিবর্তে বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন ঘটানোর আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপির আগামী দিনের নীতি বা রাজনীতি হবে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি।
তিনি জানান, দেশের ভেতরে হোক, বাইরে হোক—যাতে কর্মসংস্থান তৈরি করা যায়। শুধু কর্মসংস্থান সৃষ্টি নয়, তাদের মূল লক্ষ্য থাকবে নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসন রুখতে সতর্ক থাকার আহ্বান তারেক রহমানের
পরিবেশ সংরক্ষণের পরিকল্পনার কথাও জানান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আগামী পাঁচ বছরে আমরা ২৫ কোটি গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করেছি।
এছাড়া, পানির চাহিদা পূরণে পুনরায় খাল খনন কর্মসূচি চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের রাজপথের সহকর্মী যোদ্ধারা, কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের বা তাদের সদস্যদের বক্তব্যে-মন্তব্যে গণতন্ত্রকামী জনগণের মনে নানা জিজ্ঞাসার জন্ম দিয়েছে।
তিনি গণতন্ত্রের পক্ষের সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি দূরত্ব তৈরি হয়, তাহলে পতিত ও পলাতক ফ্যাসিস্ট চক্রের পুনর্বাসনের পথ সুগম হয়ে উঠবে।” তিনি দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের সর্বস্তরের জনগণের সামনে বিএনপির পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরুন।
তিনি বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা জনগণকে বলি—‘ভোট দিলে ধানের শীষে, দেশ গড়ব মিলেমিশে।’
তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আরও বলেন, এমন কাজ করবেন না, যাতে জনগণের মনে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হয়।
সভায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালের ১৯ আগস্ট প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিএনপির অঙ্গসংগঠন ‘জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল’ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দুপুরে শেরে বাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








