সংখ্যালঘুদের প্রতি বিএনপি: ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে নয়, সরাসরি বলুন
ঢাকা: হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি বলেছে, ‘আপনাদের ঝেড়ে কাশার সময় হয়েছে। ইনিয়ে-বিনিয়ে বা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে নয়, সরাসরি বলুন; শাসক দলের মন্ত্রী-এমপি ও লোকেরা আপনাদের নির্যাতন করছে। সম্পত্তি দখল করছে। মেয়েদের ধর্ষণ করছে।’
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন এ সব কথা বলেন।
রিপন বলেন, “পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গতকাল (বৃহস্পতিবার) বলেছে- ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে শাসক দলের লোকেরা তাদের সম্পত্তি দখল করছে। তাদের মেয়েদের ধর্ষণ করছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই স্থানীয় সরকারমন্ত্রির নাম উল্লেখ করে বলেছে- ফরিদপুরে হিন্দু জমিদার বাড়ির দেয়াল ভেঙে জায়গা দখল করা হচ্ছে। ঠাকুরগাঁওয়ের সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম হিন্দু সম্প্রদায়ের ভূমি দখল করেছেন।”
বিএনপি কোনো সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু তত্ত্বে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশি জাতীয়তার ভিত্তিতে এ দেশে আমরা সবাই বাংলাদেশি। আইন ও সংবিধান সম্মত অধিকারের দৃষ্টিতে সবাই সমান, আমরা এ তত্ত্বে বিশ্বাস করি। যখন সরকারের কোনো মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ওঠে তখন সরকারের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা ও তদন্ত করা। হিন্দু বৌধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের কাছে একটি আবেদন থাকবে একটু কেশে কথা বলুন। গলা ঝেড়ে কেশে পরিস্কার করে সরাসরি কথা বলার এখন সময় এসেছে।। কারণ এই জমি দখলের ঘটনার সঙ্গে মন্ত্রী ও দুজন সংসদ সদস্য জড়িত।”
রিপন বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে আওয়ামী লীগ থেকে একটি মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়- বিএনপি সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। কিন্তু এটা সঠিক নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে বরং দেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হয়।”
এসময় ভারতে বিজিবি ও বিএসএফের ডিজি পর্যায়ের বৈঠক প্রসঙ্গে রিপন বলেন, “ওই বৈঠকে বিজিবির প্রধান বাংলাদেশের অবস্থান পরিস্কারভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। এ ব্যপারে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ ভারতের পত্রপত্রিকায় বৈঠকের বিষয়ে যে খবর প্রকাশ তাতে এই সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সহায়তাকারী একটি দেশ। এই দেশটি আমাদের প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট, কৃষ্টিকালচারের সর্ম্পক রয়েছে। কিন্তু এই দেশটির সঙ্গে আমাদের সবচেয়ে বড় কাটাতারের বেড়া রয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন সময়ে বৈঠকে সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধের বিষয়ে কথা হলেও তা ভারত মানছে না।”
রিপন বলেন, “বৈঠকের শেষ দিন ছিল গতকাল (বৃহস্পতিবার)। অথচ গতকালই নওগাঁ সীমান্তে আমাদের দেশের এক উপজাতি নাগরিক জারিয়া মুর্মুকে বিএসএফ পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দু:খজনক। এঘটনা লৌমহর্ষক, মানবতাবিরোধী। অথচ এ সব বিষয়ে বর্তমান সরকার প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে জোরালোভাবে প্রতিবাদ করতে পারছে না।”
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘সরকার কোনো কিছুই সামাল দিতে পারছে না। দেশের কোনো শ্রেণির মানুষই এদের প্রতি খুশি নয়। শুধু খুশি পাঁচ শতাংশ মানুষ। যারা এ সরকারকে ভোট দিয়েছে। বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষই এ সরকারকে আর দেখতে চায় না।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ধর্ম সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সহদফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।
নিউজবাংলাদেশ/আরআর/এএইচকে
নিউজবাংলাদেশ.কম








