News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৩৪, ১৪ জুলাই ২০২৫

ড. ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণায় হাইকোর্টের রুল

ড. ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণায় হাইকোর্টের রুল

ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণা দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছে।

সোমবার (১৪ জুলাই) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুর এর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলটি জারি করেন। 

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে এই আদেশ দেন আদালত।

রুলে প্রশ্ন তোলা হয়, অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রাষ্ট্রীয় সংস্কারে যেসব যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছেন, তাকে কেন ‘জাতীয় সংস্কারক’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে না?

আদালত এ বিষয়ে জনপ্রশাসন, মন্ত্রিপরিষদ, প্রতিরক্ষা, আইন, তথ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবদের চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে।

আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে পরিচালিত অন্তর্বর্তী প্রশাসন রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় মৌলিক পরিবর্তন এনেছে, যা ইতিহাসে বিরল। এই প্রেক্ষাপটে তাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া না হলে তার অবদান খাটো করা হবে।

আরও পড়ুন: জুলাই আন্দোলনে শহীদদের ‘জাতীয় বীর’ কেন ঘোষণা নয়: হাইকোর্ট

রুলে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, ওয়াসিম আকরামসহ অন্যান্য শহীদদের কেন ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে না?

একইসঙ্গে আদালত জানতে চায়, আন্দোলনের শহীদদের একটি বস্তুনিষ্ঠ, নির্ভরযোগ্য তালিকা প্রস্তুত করে তা গেজেট আকারে প্রকাশের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না?

আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই সরকার ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল। তবে এবার এই দাবির পক্ষে সরাসরি আদালতের রুল এসেছে, যা বিষয়টিকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে।

এই রিট আবেদনটি করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ও প্রবীণ সাংবাদিক ইমদাদুল হক।

২০২৫ সালের ২৫ জানুয়ারি তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে আইনি নোটিশ পাঠান। কিন্তু কোনো সাড়া না পাওয়ায় ১৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন তিনি।

আবেদনকারী পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. শফিকুর রহমান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে রাজধানীসহ সারাদেশে ‘বেসামরিক ন্যায়ের জন্য অভ্যুত্থান’ চলাকালে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে বহু মানুষ নিহত হন।

বিশেষভাবে আলোচিত নিহতদের মধ্যে ছিলেন,

  • আবু সাঈদ: ঢাকার পলাশী মোড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত।
  • মীর মুগ্ধ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সংঘর্ষে নিহত হন।
  • ওয়াসিম আকরাম: চট্টগ্রাম নগরীতে সেনা অভিযানে প্রাণ হারান।

তাদের পরিবার ও আন্দোলনের সহকর্মীরা বহুবার রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘জাতীয় বীর’ স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এবার সেই দাবি সরাসরি বিচার বিভাগীয় নজরে এলো।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই রুল কার্যকর হলে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন সুশীল, বেসামরিক নেতা (ড. ইউনূস) রাষ্ট্রীয় সংস্কারক হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।

একইসঙ্গে, ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ শহীদদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশিত হলে তা রাষ্ট্রীয় ইতিহাসে একটি নতুন ধারা চালু করবে, যেখানে আন্দোলনে নিহতদের কেবল রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নয়, বরং রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়