News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৮:৫৬, ১৯ আগস্ট ২০২৫

চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে ৫.৭ মাত্রা ভূমিকম্পে কাঁপল পাকিস্তান

চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে ৫.৭ মাত্রা ভূমিকম্পে কাঁপল পাকিস্তান

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানে চলমান প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যায় দেশজুড়ে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির খবরের মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে নতুন করে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে রাজধানী ইসলামাবাদসহ একাধিক অঞ্চল।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে ৬৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া, সোয়াত, বুনের ও গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চল।

গত সপ্তাহে মধ্যরাতে একটি প্রত্যন্ত গ্রামে পাহাড় ধসে নয়জনের মৃত্যু হয় এবং ২০০ জনের বেশি নিখোঁজ রয়েছেন। ধ্বংস হয়েছে ২,৭০০টির বেশি ঘরবাড়ি। উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে, তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ পর্বতমালায় উৎপত্তি হওয়া ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্প পাকিস্তানে অনুভূত হয়।

কম্পন টের পান ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি, পেশোয়ার, সোয়াত, অ্যাবোটাবাদ, চিত্রাল ও উত্তর ওয়াজিরিস্তানের বাসিন্দারা। ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ১৯০ কিলোমিটার।

আরও পড়ুন: ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল আফগানিস্তান

পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি ছিল গভীর ফোকাসের, ফলে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। পাঞ্জাবের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগও নিশ্চিত করেছে, প্রদেশে কোনো হতাহতের তথ্য নেই।

এর আগে জুলাই মাসে একই অঞ্চলে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তখনও ইসলামাবাদ, পেশোয়ার, সোয়াত ও উত্তর ওয়াজিরিস্তানে কম্পন দেখা যায়।

চলতি বছরের মার্চে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ৯ জনের মৃত্যু এবং ১৬০ জনের বেশি আহত হন। ধসে পড়ে বহু ভবন।

২০০৫ সালের ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছিলেন এক লাখের বেশি মানুষ—যা পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প হিসেবে বিবেচিত।

ভূকম্পনবিদদের মতে, আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে ভূমিকম্প সাধারণত ১৫০–২৫০ কিমি গভীরে সংঘটিত হয়। এই ধরনের গভীর ভূমিকম্পে কম্পন ব্যাপক হলেও ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাকিস্তানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে ৫০–৬০%, যার ফলে বন্যা, ভূমিধস ও ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের ঘনঘটা বেড়েছে। 

পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগ সতর্ক করেছে, আগামী কয়েক সপ্তাহে আরও দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়