হাইফায় তেল শোধনাগারে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ৩
ছবি: সংগৃহীত
গত জুন মাসে ইসরায়েলের বন্দরনগরী হাইফার তেল শোধনাগারে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তিনজন ইসরায়েলি নিহত হন, যা শুরুতে গোপন রাখা হয়েছিল।
রবিবার (১৮ আগস্ট) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে এই হামলার বিস্তারিত খবর প্রকাশিত হয়।
এতে বলা হয়, ১৭ জুন ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের হাইফা শহরের বাজান তেল শোধনাগারে তিনজন নিহত হয়েছেন। হামলার সময় শোধনাগারের অভ্যন্তরীণ কক্ষে অবস্থান করছিলেন নিহতরা। তাদের মধ্যে একজনের নাম ড্যানি আব্রাহাম (৫৯), কিরিয়াত মটজকিনের বাসিন্দা।
ইসরায়েলি দৈনিক ইসরায়েল হায়োম এবং জেরুজালেম পোস্ট সূত্রে জানা গেছে, হামলায় তেল শোধনাগার ছাড়াও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শোধনাগারের ধ্বংসস্তূপ থেকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বাজান গ্রুপ জানায়, হামলার পর শোধনাগারের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৫০ থেকে ২০০ মিলিয়ন ডলার অনুমান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪৭ নিহত, মৃতের সংখ্যা ৬২ হাজার ছাড়াল
এই হামলা ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যস্থ পারমাণবিক ও সামরিক উত্তেজনার অংশ। ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের নাতাঞ্জ, ফার্দো এবং ইসফাহান শহরের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। এই হামলায় ইরানের সেনাপ্রধান জেনারেল মোহাম্মদ বাঘারি, কয়েকজন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা ও অন্তত ১০ জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন।
এরপর ১৫ জুন ইরান ‘ট্রু প্রমিজ থ্রি’ অভিযানের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই হামলায় হাইফার বাজান শোধনাগারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হামলায় হাইফা শহরের বেশ কয়েকটি আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যদিও কেবল চারজন সামান্য আহত হন।
হাইফার মেয়র ইয়োনা ইয়াহাভ নিশ্চিত করেছেন যে, উত্তরাঞ্চলীয় শহর লক্ষ্য করে হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। হামলার পর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও তেল শোধনাগারসহ নৌঘাঁটি রক্ষায় আইডিএফ মরিয়া ব্যবস্থা নেয়। ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইসরায়েলের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ ফাঁকি দিয়ে আঘাত হানে।
ইসরায়েল পুলিশ ঘটনাস্থলে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের সরিয়ে নেয় এবং শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখে।
১৫ থেকে ২৪ জুন চলা সংঘাতের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ২৪ জুন ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছে। হামলা ও পাল্টা হামলার এই চক্র মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।
বাজান গ্রুপ জানিয়েছে, শোধনাগারের কিছু ইউনিট ধীরে ধীরে পুনরায় চালু হবে। তবে ক্ষতির মাত্রা ও তেল সরবরাহে অস্থায়ী বিঘ্ন রয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








