News Bangladesh

তথ্য-প্রযুক্তি ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৮:০৭, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিদ্বন্দ্বী আইএসপি ব্যবসা ধ্বংসের চেষ্টা চলছে: তৈয়্যব

প্রতিদ্বন্দ্বী আইএসপি ব্যবসা ধ্বংসের চেষ্টা চলছে: তৈয়্যব

ফাইল ছবি

দেশের ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডিং (আইএসপি) খাতে ভয়ংকর সাইবার ষড়যন্ত্রের তথ্য-প্রমাণ সরকারের হাতে এসেছে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। 

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লিখেছেন, কিছু অসাধু আইএসপি প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে সংগঠিত DDoS (Distributed Denial of Service) আক্রমণের মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর নেটওয়ার্ক ও ব্যবসা ধ্বংসের চেষ্টা করছে। এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষের হাতে এসেছে। তাদের বর্তমান লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে এবং ভবিষ্যতের নতুন লাইসেন্সিং প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগও সীমিত করা হবে। বাংলাদেশের সাইবার সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, কোনো নেটওয়ার্কে বেআইনি প্রবেশ, হ্যাকিং বা ইচ্ছাকৃত সেবা বিঘ্ন ঘটানো একটি গুরুতর অপরাধ।

সাইবার আক্রমণের পাশাপাশি আইএসপি খাতের আরেকটি বড় সমস্যা হিসেবে উঠে এসেছে বিপুল পরিমাণ আর্থিক বকেয়া ও প্রতারণা। 

ফয়েজ আহমদের তথ্য অনুযায়ী, বহু আইএসপি কোম্পানি সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যান্ডউইথ কিনে অর্থ পরিশোধ না করে কৌশলে অন্য আইটিসি বা আইআইজি প্রোভাইডারে স্থানান্তরিত হয়েছে। বিটিআরসি স্পষ্ট জানিয়েছে, বকেয়া অপরিশোধিত রেখে কোনো লাইসেন্স নবায়ন করা হবে না।

আরও পড়ুন: ১৬ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ হবে অবৈধ মোবাইল ফোন

এছাড়া, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত কিছু কোম্পানি কোটি কোটি টাকা পাওনার নামে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ভুয়া চেক দিয়ে প্রতারণা করেছে। এর ফলে চেক বাউন্সিং-এর মতো গুরুতর আর্থিক অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। 

উদাহরণ হিসেবে ‘আমরা নেটওয়ার্ক’-এর নাম উল্লেখ করে তিনি জানান, এই অপরাধের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

দেশের ইন্টারনেট সেবা খাতকে সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ করতে বিটিআরসি ইতোমধ্যে সব আইএসপি প্রতিষ্ঠানের প্রতি কঠোর নির্দেশনা জারি করেছে। নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • সুরক্ষা ব্যবস্থা: প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুত অ্যান্টি-DDoS সেটআপ ও লোড-ব্যালান্সার স্থাপন করতে হবে।
  • বিনিয়োগ: নেটওয়ার্ক নিরাপত্তায় যথাযথ বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
  • প্রতিযোগিতা: প্রতিযোগিতা সীমিত করতে টার্গেটেড অন্যায় আচরণ বন্ধ করতে হবে।
  • আইনি সহায়তা: ক্ষতিগ্রস্ত আইএসপি-দের প্রতি বিটিআরসির আহ্বান— তারা যেন শুধু সরকারের ওপর নির্ভর না করে, বরং একত্র হয়ে DDoS আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা হলে সরকার অপরাধ দমনে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা দিতে সক্ষম হবে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সতর্ক করে বলেন, নিজের পরিচিত কিংবা ভাই-বেরাদার বলে DDoS আক্রমণকারীদের নাম লুকিয়ে রাখবেন না। বরং ক্ষতিগ্রস্তরা একত্র হয়ে মামলা করুন।

তিনি আরও বলেন, বিটিআরসি অবৈধ আক্রমণকারীদের ধরবে, পাশাপাশি আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের অবকাঠামোকে নিরাপদ করতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করবে। যৌথভাবে কাজ করে আমরা বাংলাদেশের ইন্টারনেট সেবা খাতকে আরও সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ করবো।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়