মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে জাটকা শিকারে নিষেধাজ্ঞা
 
									ফাইল ছবি
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও প্রজনন সুরক্ষার লক্ষ্যে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে সাগর ও নদীতে শুরু হচ্ছে জাটকা ইলিশ শিকারের ওপর ৮ মাসব্যাপী নিষেধাজ্ঞা। আগামীকাল শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।
সরকার ঘোষিত এ সময়ে ১০ ইঞ্চির নিচের ছোট ইলিশ ধরা, বিক্রি, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, সংরক্ষণ, বিনিময় বা মজুত করা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
মৎস্য আইন অনুযায়ী, এ নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে ১ থেকে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম নিউজবাংলাদেশকে জানান, জাটকার অবরোধ সফল করতে জেলা প্রশাসন, কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের সমন্বয়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হবে। আমাদের লক্ষ্য—ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়ানো ও টেকসই প্রজনন পরিবেশ নিশ্চিত করা।
তিনি আরও বলেন, অবরোধকালীন সময়ে জেলার নিবন্ধিত ৮৯ হাজার ৪৩ জন জেলেকে ৪ মাসের জন্য সরকারের ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় মাসে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। এতে জেলেদের কিছুটা আর্থিক স্বস্তি আসবে বলে আশা করছি।
অন্যদিকে, মহিপুর মাছ বন্দর এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, অবরোধের সময় ব্যবসায় কিছুটা ক্ষতি হয়, কিন্তু আমরা জানি—জাটকা না ধরলে ভবিষ্যতে বড় ইলিশ বেশি পাওয়া যায়। সরকার যদি চালের পাশাপাশি কিছু নগদ সহায়তাও দিত, তাহলে জেলেরা আরও স্বস্তিতে থাকতে পারত।
আরও পড়ুন: ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ অধ্যাদেশের চূড়ান্ত অনুমোদন
একই এলাকার আরেক ব্যবসায়ী সালাম হাওলাদার জানান, এই সময়ে হিমঘরগুলো প্রায় ফাঁকা থাকে। তারপরও জাটকা রক্ষার জন্য আমরা সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতের জন্য এটি দরকার।
লতাচাপলী ইউনিয়নের জেলে ইদ্রিস ফকির বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় সংসার চালানো কঠিন হয়ে যায়। তবে সরকার চাল দেয়, এতে কিছুটা সহায়তা হয়। পাশাপাশি কিছু নগদ টাকা দিলে আমরা ভালোভাবে চলতে পারতাম।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, জাটকা রক্ষায় শনিবার সকাল থেকেই সাগর ও নদীতে কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে একযোগে অভিযান শুরু হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এই অভিযানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জাটকা ধরা ও পাচার রোধের পাশাপাশি জেলেদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো। একইসঙ্গে জাটকা সংরক্ষণে বিশেষ নজরদারি থাকবে পটুয়াখালীর কলাপাড়া, দশমিনা, গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলার উপকূলীয় নদীগুলোতে।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা চাই জেলেরা সহযোগিতা করুক। নিষেধাজ্ঞা সফল হলে আগামী বছর ইলিশের উৎপাদন আরও অন্তত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বাড়তে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইলিশের প্রজনন সুরক্ষা, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা ও রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এই দীর্ঘ ৮ মাসের অবরোধ বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি






































