News Bangladesh

বিনোদন ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৯:২৫, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

‘ভারতীয় গুপ্তচর’ অ্যাখ্যা দিয়ে অভিনেত্রী শাওনের গ্রেফতার দাবি

‘ভারতীয় গুপ্তচর’ অ্যাখ্যা দিয়ে অভিনেত্রী শাওনের গ্রেফতার দাবি

ছবি: সংগৃহীত

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে। একই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড এবং রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল, যার নেতৃত্বে ছিলেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার। 

আদালতের রায় ঘোষণার আগে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বুলডোজার নিয়ে পুনরায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

সকাল ১২টার দিকে ট্রাকে করে দুটি বুলডোজার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আনা হয়। বুলডোজার নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছাত্র-জনতাকে হাসিনার ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। উপস্থিতরা জানায়, তারা ‘রেড জুলাই’ নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে বুলডোজার নিয়ে এসেছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি ‘বুলডোজার মিছিল’ কর্মসূচির সময় ওই বাড়ির অর্ধেকের বেশি অংশ ভাঙা হয়।

এই পরিস্থিতিতে অভিনেত্রী ও সংগীতশিল্পী মেহের আফরোজ শাওন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে বুলডোজার নিয়ে যাওয়া ছাত্র-জনতাকে ‘রাজাকার’ আখ্যা দেন। 

তিনি লিখেছেন, মনের ভয়ই আসল ভয়, বুঝেছিস গাধার দল! বারবার ভেঙে, বারেবারে আগুন দিয়েও তোদের ভয় যায়নি… এই ভাঙা বাড়ির প্রতিটা ধূলিকণা যে বাংলাদেশের আকাশে বাতাসে মিশে আছে সেটাকে কিভাবে অস্বীকার করবিরে রাজাকার বাহিনী!

আরও পড়ুন: আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন মেহজাবীন চৌধুরী

শাওনের এই স্ট্যাটাসে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছেন #তুই_রাজাকার ও #ধানমন্ডি_৩২।

স্ট্যাটাসের পর নেটদুনিয়ায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। নেটিজেনরা তাকে ‘আওয়ামী কালচারাল ফ্যাসিস্ট’, ‘ভারতীয় গুপ্তচর’, ‘খুনি হাসিনার দোসর’ ও ‘শাহবাগী’ আখ্যা দিয়ে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছেন। মন্তব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়াগুলো হলো:

দিনাত জাহান মুন্নি: “৩২ নম্বর তো, তাই ৩২ বার ভাঙতে হবে।”

নাসির উদ্দিন খান: “সাহস থাকলে আজ ৩২ নম্বর আয়।”

আল আমিন সোহাগ: “শাওন হয়তো কিছু একটা হারিয়ে ফেলেছে, এজন্য ধানমন্ডি ৩২ নিয়ে এত কান্নাকাটি করছে।”

সাব্বির, জামাল আজিজ, শরীফুল ইসলাম: শাওনের বাসাতেও বুলডোজার নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ।

মাকসুদ আলম পাটোয়ারী: “এই ফ্যাসিবাদের প্রোডাক্টটিকে কেউ ৩২ নিয়ে ছেড়ে দাও, ৩২ থেকে তার কান্নার শব্দে যেন আওয়ামী লীগের ঘুম ভাঙে!”

রুবেল কানিস: “শাওন ভারতের একজন গুপ্তচর হিসেবে বাংলাদেশে অবস্থান করছে, তাকে আইনের আওতায় আনা হোক, তার জমি, ব্যাংক ব্যালেন্স জব্দ করা হোক।”

সেনাবাহিনী ও পুলিশ দুইটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২-এর বাড়ির দিকে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। মধ্যরাতে নিরাপত্তা বজায় রাখতে সেখানে সরকারিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

জাতীয় রাজনীতির সংবেদনশীলতার প্রেক্ষাপটে এই ঘটনা নতুন করে উত্তাপ সৃষ্টি করেছে। গত বছরের অভ্যুত্থান, শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও ধানমন্ডি ৩২-এর পুনরায় ভাঙচুর—সব মিলিয়ে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি গুরুত্বপূর্ণ ও বিতর্কিত দিন হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়