গ্রেফতারের দিন থেকেই সাজা কার্যকর: অ্যাটর্নি জেনারেল
ছবি: সংগৃহীত
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেন। অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন রাজসাক্ষী হওয়ায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থান দমনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এ মামলা হয়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম মামলাটি দায়ের করা হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। গত বছরের ১৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
মামলায় পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়—উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা ও আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো।
৮৪ সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জন সাক্ষ্য দেন। প্রথম সাক্ষী হিসেবে খোকন চন্দ্র বর্মণ জুলাই-আগস্টের বীভৎসতার চিত্র তুলে ধরেন। গত ৮ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা শেষে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এরপর ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
আরও পড়ুন: রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক আইজিপি মামুনের ৫ বছর কারাদণ্ড
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে তিনটিতে সাজা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ‘ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়’-এর জন্য আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং সরাসরি নির্দেশনার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রাজসাক্ষী হিসেবে দায় স্বীকার করায় সাবেক আইজিপি মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আইনের বিধান অনুযায়ী আসামিরা যেদিন গ্রেফতার হবেন, সেদিন থেকেই তাদের সাজা কার্যকর হবে।
রায় ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলনে অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, এই রায় শহীদদের প্রতি, দেশের প্রতি, গণতন্ত্রের প্রতি, সংবিধানের প্রতি এবং আগামী প্রজন্মের প্রতি দায় পরিশোধের স্বার্থে একটি যুগান্তকারী রায়। এটি জনমানুষের মনে প্রশান্তি আনবে এবং বাংলাদেশে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরাতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করি। রাষ্ট্র আইনিভাবে যা যা করণীয়, সবটুকু করবে।
আদালত শহীদদের পরিবার ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এই মামলায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো বিষয় ছিল না, তাই আদালত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
পলাতক আসামিদের আপিলের সুযোগ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পলাতক অবস্থায় আপিল করার সুযোগ বাংলাদেশে শুধু নয়, বিশ্বের কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই।
রায় ঘোষণাকারী ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান ছিলেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার। অপর দুই বিচারক ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








