মোহাম্মদপুরে মাদক নিয়ে সশস্ত্র সংঘর্ষ, নেপথ্যে “শান্তি বাহিনী”

ছবি: সংগৃহীত
গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) থেকে সোমবার (১১ আগস্ট) পর্যন্ত মাদক নিয়ে সশস্ত্র সংঘর্ষে কাঁপছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের পুরো এলাকা।
শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের আধিপত্য নিয়ে বিরোধে “শান্তি বাহিনী” নামের সন্ত্রাসী গ্যাংয়ের সক্রিয় অংশগ্রহণে সংঘর্ষ বাধে। যা ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির তীব্র শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।
বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা আদালত থেকে জামিন পেয়ে নতুন করে এলাকা দখলে নিতে সংঘর্ষে লিপ্ত। থানার সঙ্গে তাদের গভীর যোগাযোগ থাকার কারণে পুলিশ অভিযানের আগেই খবর পেয়ে যায় ব্যবসায়ীরা, ফলে এখনও পর্যন্ত কোন মামলা বা গ্রেফতারির তথ্য নেই।
আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থা বশির বাবুর্চি (৪০), মদিনা (২০) ও ফায়জান (২৫)। বাসিন্দারা মামলায় শীর্ষ মাদক কারবারিদের জামিন বাতিলের দাবি জানিয়েছে।
জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বুনিয়া সোহেল ও বেজি নাদিম “শান্তি বাহিনী” নামে সন্ত্রাসী গ্যাংকে ভাড়া দিয়ে আধিপত্য বিস্তার করছেন।
শান্তি বাহিনীর প্রধান শাহনেওাজ সান্নুর নেতৃত্বে তারা পিস্তল ও ককটেল বিস্ফোরণ করে নিরীহ বাসিন্দাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। পিচ্চি রাজা, মনু মিয়া, পোপলা মুন্না, চুয়া সেলিম, খুল্লা সাহিদ ও দোগলা আজমের মতো মাদক ব্যবসায়ী দলটির সঙ্গে জড়িত।
আরও পড়ুন: মোহাম্মদপুরে সেনা অভিযানে কিশোর গ্যাংয়ের ৪ সদস্য গ্রেফতার
৭ আগস্ট রাতে একটি বিয়ের হলুদ অনুষ্ঠানে ককটেল বোমা হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন বাবুর্চি নাসির। ১০ আগস্ট তিন দফায় আরও তিনটি ককটেল বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন মানসিক ভারসাম্যহীন মদিনা বেগমসহ অনেকেই, ও দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বুনিয়া সোহেল ৭ নম্বর সেক্টরের হুমায়ুন রোড এলাকায় হেরোইন বিক্রি করে আসছে। পিচ্চি রাজা ও মনু মিয়া নতুন করে ওই এলাকায় হেরোইন ব্যবসা শুরু করেছে। এই স্পট দখলের লড়াইয়ে গত কয়েকদিন সংঘর্ষ তীব্রতর হয়েছে।
বুনিয়া সোহেলের নামে অন্তত ৩০টি মামলা রয়েছে, তিনি আব্দুস সালামের ছেলে। পোপলা মুন্না, বেজি নাদিম, চুয়া সেলিম, খুল্লা সাহিদ, দোগলা আজম ও পিচ্চি রাজার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মাদক ও হত্যা মামলা রয়েছে।
২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর সিলেট থেকে র্যাব তাকে গ্রেফতার করলেও কিছু মাস পর জামিনে বেরিয়ে আবার ব্যবসা শুরু করেন। চলতি বছরের ৪ জুন সেনাবাহিনী ও র্যাব-২ যৌথ অভিযানে তার মাদক বিক্রির কয়েক কোটি টাকা জব্দ করেছে।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পুলিশের আগমনের আগেই ব্যবসায়ীরা খবর পেয়ে বিভিন্ন স্থানে সোর্স রাখে। পুলিশের সাথে তাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বলেছেন, মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে লিপ্ত। আমরা নিয়মিত তাদের গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করছি। তবে জামিনে ফিরে আবার ব্যবসা দখলে নিতে সংঘর্ষ করে। আমরা আবারও তাদের গ্রেফতার করবো।
ধারালো অস্ত্রের কোপে শাহ আলম নামে একজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ফয়সাল নামের এক ব্যক্তিকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি