হাসপাতালের শয্যায় কোরআন মুখস্ত করে ফেললেন রিম

রিম আবু উদ্দাহ। ছবি: সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের মধ্যে বিরল সাহস ও ঈমানি দৃঢ়তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন কিশোরী রিম আবু উদ্দাহ। ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক বোমাবর্ষণে গুরুতর আহত হয়েও হাসপাতালের শয্যাশায়ী অবস্থায় পুরো কোরআন হিফজ (মুখস্থ) করেছেন তিনি। তীব্র শারীরিক যন্ত্রণা সত্ত্বেও অধ্যবসায় ও আস্থার শক্তিতে পবিত্র কোরআনের পথে সফল হয়েছেন রিম।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
হাসপাতালে শয্যাশায়ী রিম গণমাধ্যমটিকে বলেন, “কোরআন মুখস্থ করার পথটি আমার জন্য যেমন সুন্দর ছিল, তেমনি কঠিনও ছিল।”
তিনি জানান, গত বছর ২৪ আগস্ট ছিল তার মায়ের মৃত্যুদিবস। সেই দিনেই কোরআন হিফজ সম্পন্ন করার ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের দুই দিন আগে, ২২ আগস্ট ইসরায়েলি বিমান হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি। বোমার আঘাতে তার শরীরের একাধিক স্থানে শেলবিদ্ধ হয় এবং পেটে মারাত্মক জখম হয়।
রিম বলেন, “আমি সেই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিলাম, যেটিকে দখলদাররা নিরাপদ বলে ঘোষণা করেছিল। কিন্তু আমাদের পাশের তাঁবুতেই হামলা চালানো হয়। আল্লাহর অনুগ্রহে, প্রায় এক মাস চিকিৎসাধীন থাকার সময় হাসপাতালেই কোরআন মুখস্থ সম্পন্ন করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, আমি কোরআন হিফজ করেছি।”
রিমের বোন সাফা আবু উদ্দাহ জানান, “রিম হাসপাতালের শয্যায় শুয়েই কোরআন মুখস্থ করেছে। সে প্রতিদিন তেলাওয়াত করত, আর চিকিৎসকেরা তার অবিশ্বাস্য ধৈর্য ও মানসিক শক্তি দেখে বিস্মিত হতেন।”
রিম তার বোন সাফাকে জীবনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ও অবলম্বন হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এই ভয়াবহ যুদ্ধের পুরো সময় জুড়ে কোরআনই ছিল আমার ধৈর্য ও স্থিতিশীলতার প্রধান উৎস।”
আরও পড়ুন: হজের তিন প্যাকেজ ঘোষণা, খরচ কমছে সামান্য
কোরআন হিফজের এই অসাধারণ সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ গাজা শহরের হাবিব মুহাম্মদ সেন্টারের পক্ষ থেকে রিম আবু উদ্দাহকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। রিমের এই অর্জন গাজার ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও ঈমান, দৃঢ়তা ও শিক্ষার প্রতি ভালোবাসার এক উজ্জ্বল প্রতীক হয়ে ফিলিস্তিনি জনগণসহ সারা বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি