News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:০৫, ৯ নভেম্বর ২০২৫
আপডেট: ১০:১১, ৯ নভেম্বর ২০২৫

‘দলীয় স্বার্থ নয়, গণতান্ত্রিক সরকার গঠনই অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব’

‘দলীয় স্বার্থ নয়, গণতান্ত্রিক সরকার গঠনই অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব’

ছবি: সংগৃহীত

জনগণের ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়।

শনিবার (০৮ নভেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোট আয়োজিত হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলনে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সম্মেলনে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন ও মঠ-মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের ভোটে প্রতিষ্ঠিত একটি জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কর্তব্য। অবশ্যই কোনো দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এ সরকারের কাজ নয়। বিএনপি সরকারের প্রতি কোনো চাপ প্রয়োগের পরিবর্তে ভিন্ন মতের জায়গাগুলোতে ‘নোট অফ ডিসেন্ট’ দিয়েছে— এটাকেই আমরা ‘ডিসেন্ট ওয়ে’ বলে মনে করি।

তিনি সতর্ক করে বলেন, দেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে অতীতে পতিত, পলাতক ফ্যাসিবাদী অপশক্তির পুনর্বাসনের পথ সুগম হতে পারে। 

“ফ্যাসিবাদ শাসনামলে ফ্যাসিবাদের রোষানল থেকে বাঁচতে অনেকে গুপ্ত কৌশল অবলম্বন করেছিল; একইভাবে আজও পরাজিত শক্তি ‘গুপ্ত রাজনীতি’র আশ্রয় নিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ বাধাগ্রস্ত করতে পারে, বলেন তিনি।

বিএনপি নেতা বলেন, পতিত ও পলাতক অপশক্তিকে কোনো সুযোগ না দেওয়ার কৌশল হলো ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা। বিএনপি তাই অন্তর্বর্তী সরকার ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গীদের সঙ্গে সহযোগিতা ও সমঝোতার দৃষ্টিভঙ্গি সমুন্নত রেখেছে।

আরও পড়ুন: ‘তারেক রহমান দেশে ফিরবেন ডিসেম্বরে’

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি বরাবরই শান্তিকামী, সহনশীল ও গণমুখী দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভিন্ন দল ও মতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ। জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করাই আমাদের রাজনীতির লক্ষ্য।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ৫০ লাখ পরিবারের নারী প্রধানের নামে ফ্যামিলি কার্ড ইস্যু এবং ক্ষুদ্র-মাঝারি কৃষকদের জন্য ফার্মাস কার্ড চালু করবে। তরুণদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে কারিগরি ও ভাষা প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করা হবে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আপনাদের ধর্মীয় পরিচয়কে কেউ যেন দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে— সে বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। নিজেদের সংখ্যালঘু ভাববেন না। এই বাংলাদেশে সবার অধিকার সমান— কারও বেশি, কারও কম নয়। আমাদের মূলনীতি— আমার আগে আমরা, আমাদের আগে দেশ, সবার আগে বাংলাদেশ।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়ে তুলতে চাই, যেখানে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের সমান মর্যাদা থাকবে। 

তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে আহ্বান জানান, আপনাদের দাবি তখনই বাস্তবায়ন সম্ভব হবে, যখন আপনারা বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দেবেন।

সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ্র চন্দ্র প্রামাণিক, হিন্দু ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক সোমনাথ দে, সদস্য সচিব কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল ও মতুয়া নেতা সুবর্ণা রানী ঠাকুর প্রমুখ।

সম্মেলনে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ বেদ ও গীতা পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। আয়োজকেরা মতুয়া ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন দাবি— যেমন হিন্দু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি ফেরত প্রদান এবং শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকীতে সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি তুলে ধরেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়