News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ৭ নভেম্বর ২০২৫

ইরান হামলায়ে সরাসরি নেতৃত্বের কথা স্বীকার করলেন ট্রাম্প

ইরান হামলায়ে সরাসরি নেতৃত্বের কথা স্বীকার করলেন ট্রাম্প

ফাইল ছবি

ইরানে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে দীর্ঘদিনের ধোঁয়াশা অবশেষে কাটল। 

বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) এক সাংবাদিক সম্মেলনে হামলার বিষয়ে প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি বলেছেন, ইরানে ইসরায়েলের হামলায় তিনি সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন। যদিও এর আগে তিনি দাবি করেছিলেন, ইসরায়েল একক সিদ্ধান্তে তেহরানে হামলা চালিয়েছিল।

ট্রাম্প বলেন, ইসরায়েল ইরানে প্রথম আক্রমণ করেছিল। ওই হামলাটি ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। আমি সেই হামলার মূল দায়িত্বে ছিলাম। 

তিনি আরও যোগ করেন, ইসরায়েলের ইরানে হামলার প্রথম দিনটি ছিল অত্যন্ত অসাধারণ। কারণ অন্যান্য হামলার তুলনায় সেই দিন ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছিল।

চলতি বছরের ১৩ জুন, কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই ইরানের বিরুদ্ধে ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামলার প্রথম দিনেই নিহত হন ইরানের একাধিক শীর্ষ জেনারেল, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং বহু বেসামরিক নাগরিক। পাল্টা জবাবে ইরান ইসরায়েলের দিকে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।

১২ দিনের এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। তবে যুদ্ধের শুরুতে ওয়াশিংটন জোর দিয়ে বলেছিল, ইসরায়েল একতরফাভাবে এই হামলা চালিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র এতে জড়িত নয়।

আরও পড়ুন: মামদানির জয়ে সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

যুদ্ধের প্রথম দিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছিলেন, আজ রাতে, ইসরায়েল ইরানে হামলা চালিয়েছে। আমরা ইরানের বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত নই এবং আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ওই অঞ্চলে আমেরিকান বাহিনীকে সুরক্ষা দেওয়া।

এ সময় যুক্তরাষ্ট্র তেহরানকে সতর্ক করে জানায়, মার্কিন সেনা ও তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে।

কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এরপর থেকেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুদ্ধের ফলাফলের কৃতিত্ব নিতে শুরু করেন। তিনি একাধিকবার দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস’ করেছে।

তবে বৃহস্পতিবারের বক্তব্যে ট্রাম্প আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেন, আমি পুরোপুরি এই হামলার দায়িত্বে ছিলাম।

তার এই বক্তব্য পূর্ববর্তী অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, যেখানে তিনি বলেছিলেন, হামলার সিদ্ধান্ত ছিল ইসরায়েলের একক।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ হামলার পর ইরান তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক মূল্যায়ন প্রকাশ করেনি। তবে ইরানি কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি এখনও কার্যকর রয়েছে এবং এটি মূলত গত কয়েক দশকে অর্জিত জ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হচ্ছে।

তবে ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুতের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

ট্রাম্পের এই স্বীকারোক্তি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ববর্তী অবস্থানকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেনি, বরং মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে ঘিরে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। 
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বক্তব্য ভবিষ্যতে কূটনৈতিক সম্পর্ক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

সূত্র: আল জাজিরা

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়