“আগামী কয়েক দিনে অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে”
ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীরবিক্রম) মন্তব্য করেছেন যে, প্রস্তাবিত ‘জুলাই সনদ’-এ সই করা হলে দেশের বিদ্যমান সংবিধান পরিবর্তিত হয়ে যাবে। তিনি এই ধরনের পদক্ষেপকে দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন বলে অভিহিত করেছেন এবং এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আজ (বুধবার) রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
'অনির্বাচিতদের হাতে সংবিধান সংশোধনের চেষ্টা'
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, আগামী দিনগুলোতে অদ্ভুত এক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, পৃথিবীর সব দেশে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সংবিধান সংশোধন করেন। কিন্তু বাংলাদেশে একদল অনির্বাচিত লোক, যারা আমেরিকা বা লন্ডন থেকে এসেছেন এবং যাদের ১৭ বছরের আন্দোলনে কোনো অবদান নেই, তারা বাংলাদেশের সংবিধান ছুড়ে ফেলতে চান।
তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে যে সশস্ত্র যুদ্ধ হয়েছিল, তার ফসল এই বাহাত্তরের সংবিধান।
তিনি আরও বলেন, এটি আওয়ামী লীগের সংবিধান নয়। যারা ক্ষমতায় এসেছেন, তারাই এই সংবিধান সংশোধন করেছেন এবং সেই পথ এখনো খোলা আছে। এই পরিস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সংবিধান কেন ছুড়ে ফেলতে হবে, তা তার বোধগম্য নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসন রুখতে সতর্ক থাকার আহ্বান তারেক রহমানের
সংবিধান সংশোধনের একমাত্র অধিকার সংসদের উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা জোর দিয়ে বলেন, সংবিধান সংশোধন করার একমাত্র অধিকার রয়েছে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের। জাতীয় সংসদ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সংবিধান সংশোধন করার অধিকার রাখে না।
তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ’-এ সই করার অর্থ বিদ্যমান সংবিধানকে বাতিল করে দেওয়া, যা পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয় কোনো উদাহরণ নেই।
প্রথম সারির অন্যান্য সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিএনপি, আওয়ামী লীগসহ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটি ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলছে। এই সনদটি মূলত একটি রাজনৈতিক সমঝোতা স্মারক, যা আগামী নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক সংকটের সমাধানের পথ খুলে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, হাফিজ উদ্দিন আহমেদের মতো কিছু নেতার মতে, এই সনদের কিছু ধারা বিদ্যমান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
এই সনদে কী আছে তা এখনো স্পষ্টভাবে জানা যায়নি, তবে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে যে এটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন, নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম তৈরির বিষয়ে সুপারিশ করতে পারে।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, এবং গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন।
অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আহসান। এছাড়া, শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন দলের সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াসিন আলী। অনুষ্ঠানে শহীদ ও গুম হওয়া পরিবারের ৩ জন সদস্য তাদের বক্তব্য দেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








